Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
এজলাসে প্রশ্ন তুললেন বিচারক, পুলিশ মানল ভুল

একই লোকের বিরুদ্ধে দুই অস্ত্র আইন

পুলিশ সূত্রে খবর, এক যুবকের কাছে অস্ত্র রয়েছে শুনে ওই মোটরবাইক মিছিলের পরের দিন,  বৃহস্পতিবার বিকেলে সাঁইথিয়া থানার পুলিশ  মহম্মদবাজার থানা এলাকা থেকে মেঘদূত মণ্ডল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে।

প্রকাশ্যে: সাঁইথিয়ার এই মিছিল ঘিরেই অভিযোগ বিরোধীদের। ফাইল চিত্র

প্রকাশ্যে: সাঁইথিয়ার এই মিছিল ঘিরেই অভিযোগ বিরোধীদের। ফাইল চিত্র

নিজস্ব  সংবাদদাতা
সিউড়ি ও সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৯ ০১:১৩
Share: Save:

একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কী ভাবে দু’টি পৃথক অস্ত্র আইনে মামলা করা যায়, শুক্রবার সে প্রশ্ন তুললেন বীরভূমের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) শান্তনু ঘোষাল। এখানেই শেষ নয়, জটিলতা দূর করতে ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট সাঁইথিয়া থানার ওসিকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশও দেন সিজেএম।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার সাঁইথিয়ার হরিশাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে মোটরবাইক মিছিলে এক যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যেতে দেখা যায়। সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি দেখেই সরব হন বিরোধীরা। অভিযোগ জানানো হয় নির্বাচন কমিশনেও। সাঁইথিয়ার বিডিও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে অস্ত্র আইন, এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানো-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, এক যুবকের কাছে অস্ত্র রয়েছে শুনে ওই মোটরবাইক মিছিলের পরের দিন, বৃহস্পতিবার বিকেলে সাঁইথিয়া থানার পুলিশ মহম্মদবাজার থানা এলাকা থেকে মেঘদূত মণ্ডল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে। তাঁর বাড়ি সাঁইথিয়ার বাগডহরি গ্রামে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বাড়ি লাগোয়া একটি খড়ের পালুই থেকে বন্দুকও উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশের দাবি। সেই অনুযায়ী মেঘদূতের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়। পুলিশের দাবি, পরে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় মোটরবাইক মিছিলে অস্ত্র নিয়ে ঘোরার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে যুবকের বিরুদ্ধে উঠেছিল, তিনি আর এই মেঘদূত একই ব্যক্তি।

কিন্তু, শুক্রবার মেঘদূতকে ওই দু’টি মামলারই অভিযুক্ত দেখিয়ে আদালতে পুলিশ পেশ করায় জটিলতা তৈরি হয়। এক জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কী ভাবে দু’বার অস্ত্র আইন মামলা দেওয়া যায়, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট। জটিলতা নিরসনে মামলার তদন্তকারী অফিসার এবং থানার ওসিকে তলব করেন।

আদালতের নির্দেশে দুই পুলিশ আধিকারিক হাজির হলে বিচারক প্রশ্ন তোলেন, কী ভাবে একই ব্যক্তির বিরদ্ধে দু’বার অস্ত্র আইন দেওয়া যায়? পুলিশ এজলাসে স্বীকার করে, দু’টি মামলায় যখন এক জন অভিযুক্ত, তখন মামলা দু’টিকে একত্রিত করা (ট্যাগিং) উচিত ছিল। ওই আবেদন আদালতে জানানো হবে বলে সঙ্গে সঙ্গে জানান এজলাসে উপস্থিত অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর কেশব দেওয়াসী।

জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’টি মামলায় এক জনকে গ্রেফতার দেখানোয় সাঁইথিয়ার মামলা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। পরে এপিপি একত্রিত (ট্যাগিং) করার জন্য আবেদন করেন। আগামী ৮ই মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ততদিন জেল হেফাজতে থাকবেন অভিযুক্ত।’’

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা বলেন, ‘‘ভোটারদের ভয় দেখাতেই বন্দুক হাতে মিছিল করা হয়েছিল। ওই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ।’’ তৃণমূলের সাঁইথিয়া ব্লক সভাপতি সাবের আলি খান বলেন, ‘‘ধৃত যুবক আমাদের দলের কর্মী কিনা, খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না। তবে যদি তা হয়েও থাকে, আইন আইনের পথেই চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE