শেখ শামির চাঁদের বাড়ি। ফাইল চিত্র।
ঝাড়খণ্ডে পালিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল লোকপুর বিস্ফোরণ কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত শেখ শামির চাঁদ। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতেই নাকা চেকিংয়ের সময় ধরা পড়ে সে।
মঙ্গলবার সকালে খয়রাশোলের ডেমুরটিটা গ্রামে বিস্ফোরণ হয়। উড়ে যায় শাসকদলের ঘনিষ্ঠ শামির চাঁদের বাড়ি। পুলিশের অনুমান, ঘরে প্রচুর দিশি ও সকেট বোমা মজুত ছিল। কোনও ভাবে সেখানেই বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনার পর
থেকেই পলাতক ছিলেন বাড়ির মালিক শামির চাঁদ। কেন বাড়িতে এত বোমা মজুত ছিল, তার উত্তর খুঁজতেই অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করে পুলিশ। তারপরেই গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে ধরা হয় তাঁকে। সরকারি আইনজীবী মণিলাল দে জানান, বুধবার দুবরাজপুর জেএম আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতের ছ’দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল, খয়রাশোলের রূপসপুর পঞ্চায়েতের জেমুরটিটা গ্রামের একধারে ধৃতের বাড়ি। মঙ্গলবার জিনিসপত্র মজুতের জন্য রাখা ঘরে বিস্ফোরণ হয়। সেটি বসবাসের জন্য তৈরি মূল বাড়ি থেকে বেশ কয়েক মিটার দূরে ছিল। ধারে পাশে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে তীব্রতা এতই বেশি ছিল অ্যাসবেসটসের ছাউনি, ইটের গাঁথনি দেওয়া ঘরটি গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। বিস্ফোরণের পরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও পঞ্চায়েতে টাকা আত্মসাতের তত্ত্ব সামনে এনেছিলেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি ছিল, খয়রাশোলে শাসকদলের দুটি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব বহু দিনের। শামিরচাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রূপসপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ডেমুরটিটা গ্রামে মোরাম ফেলার যে টাকা পঞ্চায়েত থেকে দেওয়া হয়েছিল, তা আত্মসাৎ করেছেন শামিরচাঁদ ও তাঁর এক সাগরেদ। মাস পাঁচেক আগের সেই অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রামে চূড়ান্ত অশান্তি হয়। পঞ্চায়েতটি শাসকদলের দখলে থাকলেও এক গোষ্ঠীর নেতার দাদাগিরিতে শাসক দল আশ্রিত দুই সমাজবিরোধী এমন কাজ করেছে বলে অভিযোগ উঠে। এতে তাঁদের বিরুদ্ধে চলে যান গ্রামের একটা বড় অংশ। এই সুযোগে বিরোধী গোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে উঠে। ঘটনার জেরে বেশ কিছু দিন ঘরছাড়া থাকতে হয় শামির চাঁদকে। পরে ফিরে এলে নিজের বাঁচার তাগিদেই বাড়িতে বোমা মজুত করেছিল বলে এলাকাবাসীর দাবি।
পুলিশ জানিয়েছে, কী প্রেক্ষিতে এবং কেন ওই বোমা মজুত করা হয়েছিল তা জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy