Advertisement
E-Paper

লটারি বন্ধ, ফল-আনাজ বেচছেন সত্যমরা

এক সময় মূলত শহরেই লটারির টিকিট বিক্রি হত। বর্তমানে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও লটারির টিকিট বিক্রির কাউন্টার গজিয়ে উঠেছে।

অর্ঘ্য ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২০ ০৩:৫৫
জীবিকা: লটারি ছেড়ে ফল বিক্রি করছেন কীর্ণাহারের সোমনাথ। ছবি: কল্যাণ আচার্য

জীবিকা: লটারি ছেড়ে ফল বিক্রি করছেন কীর্ণাহারের সোমনাথ। ছবি: কল্যাণ আচার্য

ওঁদের হাত ধরেই অনেকের ভাগ্য ফিরেছে। কিন্তু, লকডাউনের শুরু থেকে ওঁরাই ভাগ্যহত। কেউ কেউ বিকল্প জীবিকা বেছে নিলেও অধিকাংশেরই চরম সঙ্ককটে দিন কাটছে। ওঁরা লটারির টিকিট বিক্রেতা।

এক সময় মূলত শহরেই লটারির টিকিট বিক্রি হত। বর্তমানে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও লটারির টিকিট বিক্রির কাউন্টার গজিয়ে উঠেছে। ওই সব কাউন্টারে বিভিন্ন রাজ্যের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। ঘরে বসেই সেই সব খেলার ফলাফল, এমনকি প্রাইজ়ের টাকাও পৌঁচ্ছে যাচ্ছে। তাই লটারির টিকিটের চাহিদাও যথেষ্ট বেশি। সেই চাহিদাকে মাথায় রেখে গ্রামের অনেকেই লটারির টিকিট বিক্রিকে জীবিকা হিসাবে বেছে নিয়েছেন।

কিন্তু, লকডাউনের জেরে লটারি খেলা বন্ধ থাকায় ওই টিকিট বিক্রেতারা বিপন্ন হয়ে পড়ছেন। হাতে গোনা কয়েক জন বিকল্প জীবিকা খুঁজে নিলেও বাকিরা বসে রয়েছেন, কবে লটারি খেলা চালু হবে সেই প্রতীক্ষায়। কীর্ণাহারের সোমনাথ দলুই, পরোটা গ্রামের সত্যম দত্ত, আলিগ্রামের সঞ্জয় ঘোষেরা দীর্ঘদিন ধরে ডিলারের কাছে থেকে টিকিট নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন। দৈনিক ২৫০-৫০০ টাকা কমিশন পেতেন। বিক্রীত টিকিটে প্রাইজ় লাগলেও মোটা টাকা কমিশন মিলত। কিন্তু, এখন চরম সমস্যায় তাঁরা। সোমনাথবাবু স্থানীয় বাজারে ফল বিক্রি করছেন। সত্যমবাবু আনাজ এবং সঞ্জয়বাবু রাস্তায় ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘কী করব? লটারির টিকিট বিক্রি ফের কবে চালু হবে, সেই আশায় কি বসে থাকা যায়? তাই বাধ্য হয়ে বিকল্প জীবিকা খুঁজে নিতে হয়েছে। তাতে কোনও রকমে সংসার চলে যাচ্ছে।’’

ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া মোড়ের সুশান্ত মুখোপাধ্যায়, লাভপুরের সাহাদত শেখ, সাঁইথিয়ার অরুণ সাহাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে টিকিট কিনে অনেকের ভাগ্য ফিরেছে। কিন্তু আমরাই এখন ভাগ্যের ফেরে পড়েছি। তেমন পুঁজি নেই যে বিকল্প জীবিকা খুঁজে নেব। সবার তো আর ফল-আনাজ বিক্রি করা চলে না। তা হলে তো কেনার লোকই পাওয়া যাবে না।’’ একই সুরে আমোদপুরের লটারি বিক্রেতা বিকাশ পাল, মল্লারপুরের অশোক দাসেরা বলছেন, ‘‘ধার করেই বিকল্প ব্যবসা করতে হবে। ব্যবসা না চলেল ধার মেটাব কী করে? তাই লটারি চালু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।’’

কীর্ণাহারের লটারির ডিলার প্রদ্যুৎ মণ্ডলের কাছে থেকে টিকিট নিয়ে বিক্রি করেন ২৫০ জন বিক্রেতা। ৩০ জন বিক্রেতা লোকপাড়ার গৌতম দলুইয়ের কাছে থেকে টিকিট নিয়ে বিক্রি করেন। বর্তমানে বেশির ভাগই হাত গুটিয়ে বসে আছেন। প্রতিদিনই কবে লটারি চালু হবে, ডিলারের কাছে খোঁজ নিচ্ছেন। শুনেছেন, ৮ জুন খেলা চালু হওয়ার কথা রয়েছে। সেটা হলে বহু পরিবারের মুখে হাসি ফুটবে।

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy