শহরের মন জয়ের কৌশল সাজাতে গত পুরভোটে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ায় তৃণমূল ভরসা রেখেছিল রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের উপরে। সাফল্যও মিলেছিল। এ বার আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও রাঢ়বঙ্গের এই দুই জেলায় সাংগঠনিক দেখভালের দায়িত্ব মলয়ের হাতেই তুলে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার কালীঘাটে দলের সাংসদ, বিধায়ক ও সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সূত্রের খবর, সেখানে ‘বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার দায়িত্ব মলয় দেখবে’ বলে জানিয়ে দেন মমতা। ওই বৈঠকে উপস্থিত বাঁকুড়ার এক জেলা নেতা বলেন, ‘‘বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার সাংগঠনিক বিষয়গুলি মন্ত্রী মলয় ঘটক দেখবেন বলে জানিয়েছেন নেত্রী। দলকে একজোট হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিধায়ক, ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সভাপতিদের।”
সাম্প্রতিক সময়ে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ঘরে-বাইরে প্রশ্নের মুখে পড়ছেন তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। তার বাইরেও সংবাদ মাধ্যমের কাছে নানা রকম মন্তব্য করে প্রায়ই বিতর্কে উঠে আসছেন অনেকে। এতে অস্বস্তি বাড়ছে দলের।
সূত্রের খবর, কলকাতার বৈঠকে মমতা দলের কর্মীদের সংবাদমাধ্যমের দ্বারা ‘প্রভাবিত’ হতে নিষেধ করেছেন। সংবাদকর্মীদের কাছে দলের কর্মীদের বিশেষ মুখ খুলতে নিষেধ করেছেন দলনেত্রী। বাঁকুড়ার এক জেলা নেতার কথায়, “সস্তার প্রচার পেতে কিছু নেতা সংবাদমাধ্যমে আলটপকা মন্তব্য করছেন। এতে আখেরে দলেরই ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। আশা করছি দলনেত্রীর নির্দেশের পরে দলের ওই অংশের নেতারা কিছুটা সতর্ক হবেন।’’
বিরোধীরা ‘চোর’ বললেও দলের কর্মীদের ‘ভয় না পেয়ে বুক টান করে’ দল করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এ নিয়ে জেলার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ বলেন, “আমরা দল করতে গিয়ে নানা জায়গায় সমালোচনা, কটাক্ষের শিকার হচ্ছি। এই সব উপেক্ষা করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কী ভাবে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠব দলনেত্রী তা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেছেন কি না জানতে চাই আমরা।”
জেলার এক ব্লক সভাপতি জানান, আজ, রবিবার বাঁকুড়ায় দলের জেলাস্তরের একটি সাংগঠনিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তা হঠাৎ দু’দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে হয়তো এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তাহলে তাঁরা কর্মীদের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দেবেন। তবে তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্র ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায় কালীঘাটের বৈঠক নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)