ভাঙা হয়েছে গাড়ির কাচ। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় জ্বরের প্রকোপ। স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন ত্রিশ থেকে চল্লিশ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসককে দেখাতে আসছেন। অথচ এক জন চিকিৎসকের ভরসায় চলছে সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আবার সেই চিকিৎসককে স্বাস্থ্য দফতর ট্রেনিয়ের জন্য কখনও পাইকরে মুরারই ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, কখনও রামপুরহাটের অফিসে ট্রেনিংয়ে ডেকে নিচ্ছেন। এর ফলে রোগীরা হয়রান হচ্ছে।
এমন অবস্থায় মুরারই ১ ব্লকের রাজগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক জন মাত্র চিকিৎসক যখন রামপুরহাটে ট্রেনিংয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় চিকিৎসকের গাড়ি ঘিরে ঘণ্টাখানেক ঘেরাও করে রাখেন স্থানীয় রাজগ্রাম, আম্বুয়া, রাজগ্রাম রেলগেট, রাজগ্রাম বাজার, কাশিল্যা গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পৌঁছয়। পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মুরারই ১ ব্লকের বিএমওএইচ বলাইচন্দ্র রায় গাড়ি নিয়ে পৌঁছন। এরপরেই এলাকাবাসীর ধরে নেন, বিএমওএইচ পুলিশের গাড়ি নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক মাত্র চিকিৎসককে বোধ হয় নিয়ে যাচ্ছেন। শুরু হয়ে যায় বাগ-বিতণ্ডা। কিছু সময়ের মধ্যেই উত্তেজিত জনতা বিএমওএইচের গাড়ির কাঁচ পুলিশের সামনেই ভাঙচুর করে।
এলাকার বাসিন্দা রাইহান রেজা, মীরাজ শেখ, সত্যজিৎ রায়, অনুপ দত্তদের অভিযোগ, ‘‘এলাকার জ্বরের প্রকোপ দিনের পর দিন বাড়ছে। অনেকে ডেঙ্গি সন্দেহ করে তাঁদের রক্ত পরীক্ষা বাইরে থেকে করে আনছেন। তাতে রক্তের প্লেটলেট কম ধরা পড়েছে। বাইরে থেকে চিকিৎসা করে তাঁরা কেউ কেউ সুস্থ হয়েছেন। কেউ এখনও চিকিৎসার মধ্যে আছেন। এমন অবস্থায় ডাক্তার ছাড়া চলে কী করে?’’ এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, এক জন মাত্র চিকিৎসকের ভরসায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে। এখন আবার জ্বরের প্রকোপ দিনের পর দিন বাড়ছে। অথচ স্বাস্থ্য দফতর থেকে কোনও মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়নি। উল্টে যিনি চিকিৎসা করছেন তাঁকেও ট্রেনিংয়ের জন্য ডেকে নেওয়া হচ্ছে। এটা কী ভাবে চলতে পারে?
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ব্রজেশ্বর মজুমদার বলেন, ‘‘রাজগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসককে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে রামপুরহাটে প্রশিক্ষণের জন্য ডাকা হয়েছিল। এলাকায় যেহেতু জ্বরের রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছেন, তাই তাঁদের চিকিৎসার জন্য মুরারই ১ ব্লকের বিএমওএইচকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু উত্তেজিত জনতা কিছু না বুঝেই বিএমওএইচের গাড়ি ভাঙচুড় করেন।’’
স্বাস্থ্যকর্তার আরও দাবি, এলাকায় আরও এক জন চিকিৎসককে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু, তিনি এখনও কাজে যোগ দেননি। এ দিনই এলাকায় মেডিক্যাল টিম পাঠিয়ে রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন ব্রজেশ্বরবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy