Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Minor

বিয়েতে ‘বাধা’ কাটাতে নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণ! বিষ্ণুপুরে ধৃত গৃহশিক্ষক এবং পরামর্শদাতা তান্ত্রিক

শত চেষ্টা করেও পাত্রী জোটেনি। তাই তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের গৃহশিক্ষক। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে বিস্মিত পুলিশও।

তান্ত্রিকের পরামর্শে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে গ্রেফতার গৃহশিক্ষক।

তান্ত্রিকের পরামর্শে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে গ্রেফতার গৃহশিক্ষক। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২২ ১৭:১৮
Share: Save:

বয়স বাড়ছে। অথচ বিয়ে হচ্ছে না। শত চেষ্টা করেও পাত্রী জোটেনি। অগত্যা ‘বিয়েপাগল’ রক্তিম দে (নাম পরিবর্তিত) হাজির হয়েছিলেন এক তান্ত্রিকের কাছে। সেই তান্ত্রিকের পরামর্শ ছিল, নাবালিকার যোনির রক্তমাখা কাপড় পকেটে নিয়ে ঘুরলেই কাটবে সব ‘দোষ’। পেশায় গৃহশিক্ষক সেই 'রক্তবস্ত্র' জোগাড় করতে গিয়ে নিজের ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। একটি পকসো মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়ে বিস্মিত তদন্তকারীরা। সোমবার ওই তান্ত্রিককে গ্রেফতার করেছে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ।

পুলিশ সূত্রে খবর, সপ্তাহখানেক আগে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানায় এক নাবালিকা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয় গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করে। সেই শিক্ষককে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে যে তথ্য পেয়েছে পুলিশ, তা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর।

সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অভিযুক্ত জানান, তাঁর বিয়ের বয়স হওয়া সত্ত্বেও পাত্রী জুটছিল না। এর পর বেলিয়াতোড় থানার বাসিন্দা এক তান্ত্রিকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। তান্ত্রিক জানান, ‘দোষ’ কাটাতে হবে। সেই দোষ কাটানোর অদ্ভুত পন্থা মানতে গিয়েই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন রক্তিম।

রবিবার সন্ধ্যায় মাঝিপাড়া এলাকা থেকে অভিযুক্ত তান্ত্রিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ধৃতকে বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হয়।

আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে ধৃত তান্ত্রিক তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি কোনও দিন ধর্ষণে প্ররোচনা দেওয়ার কাজ করিনি। আমাকে বিনা দোষে ফাঁসানো হয়েছে।”

বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “ধৃত তান্ত্রিককে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে।”

এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক জয়দেব চন্দ্র বলেন, “আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জার। এখানে আবার অভিযুক্ত এক জন শিক্ষক। ওই তান্ত্রিকের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তা ছাড়া, এলাকায় আরও বেশি করে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করতে হবে আমাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minor bankura POCSO arrest Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE