প্রতীকী ছবি।
নিজের কিশোরী মেয়েকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে প্রায় আট মাস গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন মা। তিনি আবার মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীও (পিএইচএন)। সে খবর পেয়ে হাসপাতালের আবাসনের তালা ভেঙে বছর দশেকের মেয়েকে উদ্ধার করল পুলিশ ও শিশু সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে মহম্মদবাজারের পটেলনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে। মা ও মেয়েকে আপাতত সিউড়ির একটি হোমে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।
বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলছেন, ‘‘মানসিক সমস্যা রয়েছে ওই কর্মীর। ডিউটি করছিলেন না। বেতন বন্ধ হয়ে আছে ওঁর। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সব জানে। আপাতত মনোবিদ দিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’ জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিরুপম কর যোগ করছেন, ‘‘দাম্পত্য নিয়ে দশ-বারো বছরের টানাপড়েনে ওই সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে তাঁর মেয়ে ঠিক আছে। মায়ের সঙ্গে একান্তই না রাখা গেলে শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট হোমে পাঠানো হবে মেয়েকে।’’
মহম্মদবাজারের পটেলনগর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, পাবলিক হেল্থ নার্সিং অফিসার পদে বেশ কয়েক বছর আগে ওই মহিলা কর্মী হাসপাতালে আসেন। শুরু থেকেই বছর পঞ্চাশের ওই মহিলা কাজে না এসে আবাসনেই স্বেচ্ছাবন্দি থাকতেন। চিকিৎসা বা কাজ কোনওটাই নাকি ঠিক ভাবে করেননি। তাঁর মেয়ে সিউড়ির একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। কয়েক মাস আগে তাকেও স্কুল থেকে ছাড়িয়ে গৃহবন্দি করে রাখেন। কারও সঙ্গে কথা বলতে দিতেন না। বিএমওএইচ সুরাইয়া খাতুন বলছেন, ‘‘প্রায় এক বছর হল কাজে যোগ দিয়েছি। শুরু থেকেই এমন দেখছি। বহুবার বোঝানো হয়েছে। কাজ হয়নি।’’ এ ভাবে চলতে থাকলে শিশুর স্বাস্থ্যেও প্রভাব পড়বে, এই আশঙ্কা থেকে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে জানানো হয়।
এর পরেই পুলিশ, প্রশাসনের সাহায্যে মা, মেয়েকে উদ্ধার করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। তার পক্ষে হৃদয় সিংহ বলছেন, ‘‘অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে বের করে স্কুলে ভর্তি করানোই আমাদের উদ্দেশ্য ছিল। শুক্রবার মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী, স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পুলিশের উপস্থিতিতে ওই মহিলাকে বোঝানো হয়েছিল তিনি যেন মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করেন। উনি রাজিও হয়েছিলেন। কিন্তু, শনিবার সকালে আমরা গেলে দরজায় তালা দিয়ে ভিতরে ঢুকে যান। বাধ্য হয়েই পুলিশ তালা ভাঙে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy