Advertisement
E-Paper

হত্যা নাকি আত্মহত্যা, ধন্দে ময়ূরেশ্বর

রবিবার গভীর রাতে শিক্ষকের পোড়া দেহ উদ্ধারের পরে কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। কিন্তু, ঘটনার নেপথ্যে পরিকল্পিত খুন নাকি আত্মহত্যা— তা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। বৃন্দাবন মণ্ডলের (৩৫) দেহ উদ্ধারের পরে তাঁর বাবা প্রভাতবাবুকে জেরা করেই ঘটনার সূত্রগুলি জোড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:৪০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রবিবার গভীর রাতে শিক্ষকের পোড়া দেহ উদ্ধারের পরে কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। কিন্তু, ঘটনার নেপথ্যে পরিকল্পিত খুন নাকি আত্মহত্যা— তা নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। বৃন্দাবন মণ্ডলের (৩৫) দেহ উদ্ধারের পরে তাঁর বাবা প্রভাতবাবুকে জেরা করেই ঘটনার সূত্রগুলি জোড়ার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে সেখানেও নানা অসংগতি পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। কেমন?

তদন্তে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরেই প্রভাতবাবু দাবি করেছিলেন, ঘটনার দিন বাড়িতে ছিলেন না। কীর্তন গান করতে পাশের গ্রামে গিয়েছিলেন। গান শেষে গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন। তাঁর ওই বক্তব্যের সত্যতা মেলেনি বলেই পুলিশের একটি সূত্রের দাবি। ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে যে দলে প্রভাতবাবু গান করেন, সেই দলের মূল গায়েনের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, প্রভাতবাবুর দাবির সঙ্গে মূল গায়েনের কথার অসঙ্গতি মিলেছে বলেই ওই সূত্রটির দাবি। তবে, ওই রাতে যাই হয়ে থাকুক না কেন প্রভাতবাবু বিষয়টি জানেন বলেই পুলিশের অনুমান।

কিন্তু, তিনি কেন এমনটা করতে যাবেন, আড়ালই বা কেন করবেন? তার উত্তর এখনও পায়নি পুলিশ। তদন্তের অগ্রগতি জানতে বীরভূমের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবালকে একাধিকবার ফোন, এসএমএস করা হলেও তিনি কোনও জবাব দেননি।

সোমবার ভোরে নিজের বাড়ির দোতলার শোওয়ার ঘর থেকে উদ্ধার হয় ময়ূরেশ্বরের ব্রাহ্মণবহড়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক বৃন্দাবন মণ্ডলের পোড়া দেহ। শিক্ষকের দেহ উদ্ধার করতে গিয়ে পাশের ঘর থেকে হাতের শিরা কাটা অবস্থায় তাঁর দুই বোন বাণেশ্বরী এবং স্বাতীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায় পুলিশ। ওই ঘরেই ছিলেন প্রভাতবাবুও। দুই বোন বর্তমানে সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তাঁদের এ দিনও জেরা করতে পারেনি পুলিশ। তবে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বলেই হাসপাতাল সূত্রের খবর। সুস্থ হলে দুই বোনের সঙ্গে কথা বলবে পুলিশ।

একই সঙ্গে পুলিশকে আরও কয়েকটি বিষয় ধন্দে ফেলেছে। পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে দুই বোন দাবি করেছিলেন, এক সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার পরে দাদা তাঁদের খুন করার উদ্দেশে হাতের শিরা কেটে দিয়ে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশ রান্নাঘর খুলে তিনটি থালা পেয়েছে। তার দু’টিতে খাবার খাওয়া হলেও একটি থালায় হাত পড়েনি বলেই পুলিশের অনুমান। আবার রান্নাঘরের মেঝে এবং একটি থালায় লেগেছিল রক্তের দাগ। পুলিশের দাবি, রক্তের দাগ চলে গিয়েছে দোতলা পর্যন্ত। আবার বৃন্দাবনবাবুর শোওয়ার ঘর থেকে একটি কেরোসিন তেলের বোতল এবং দেশলাইয়ের বাক্স উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে পুড়ে যাওয়া লেপ, তোশকও। ওই লেপের তলাতেই ছিল বৃন্দাবনবাবুর পোড়া দেহ। ছোট ছোট বিষয়গুলি মিলিয়ে ঘটনার সত্যতা উদ্ধারের চেষ্টায় রয়েছে পুলিশ।

এ দিকে, সোমবার থেকেই গোটা বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়েছে। তবে গ্রামের মানুষও চাইছেন, ঘটনা যাই হোক দ্রুত সত্যতা সামনে আসুক। তবে প্রকাশ্যে কেউই কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেনা, ‘‘হত্যা বা আত্মহত্যা কোনও তত্ত্বই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে।’’

Murder Suicide Teacher Unnatural Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy