Advertisement
E-Paper

আদিবাসী পড়ুয়াদের নিয়ে নিখরচায় প্রকৃতিপাঠ শিবির, অভিনব উদ্যোগ জয়পুরের জঙ্গলে

দীর্ঘদিন ধরে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বেশ কিছু প্রান্তিক আদিবাসী গ্রামে শিক্ষার্থীদের পাঠশালা কেন্দ্রিক পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করে চলেছে ‘বোধোদয়’। এ বার সেই জনজাতি পড়ুয়াদের নিয়ে প্রকৃতিপাঠের আয়োজন করল তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:০৮
An image of Chilren

জয়পুরের জঙ্গলে আদিবাসী পড়ুয়াদের নিয়ে ‘নেচার স্টাডি ক্যাম্প’। —নিজস্ব চিত্র।

‘নেচার স্টাডি ক্যাম্প’। বাংলায় অনুবাদ করলে হতে পারে ‘প্রকৃতি পাঠ শিবির’। কথাটা শুনলেই মনে চলে যায় পাহাড়, বোল্ডার, রক ক্লাইম্বিং, টেন্ট পিচিং, স্কাই ওয়াচিং, ম্যাপ রিডিং, বার্ড ওয়াচিং, রোপ অ্যাক্টিভিটি, রিভার ক্রসিং, ট্রেজার হান্টিংয়ের দিকে। কত মজার অনুভূতি আপ স্মৃতি জমে। তৈরি হয় নানা অনুভূতি বোধ, ‘ফেলো ফিলিংস’, বিপদ-অসুবিধায় বন্ধুর পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা। এক কথায় জীবনের গোড়াতেই এক নতুন অভিজ্ঞতা।

দক্ষিণবঙ্গে এই ধরনের ক্যাম্পগুলো মূলত দক্ষিণবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার জঙ্গল, পাহাড়, নদীকেন্দ্রিক অঞ্চল গুলোতেই হয়ে থাকে। অংশগ্রহণ করেন মূলত শহর, আধাশহরের একটু আর্থিক স্বচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরাই। কিন্তু এ বার সেই ভাবনায় বদল আনল প্রকৃতিপ্রেমী সামাজিক সংগঠন ‘বোধোদয়’। সহযোগিতায় বাঁকুড়ার পাঞ্চেত বনবিভাগ এবং জয়পুর পঞ্চায়েত। দীর্ঘদিন ধরে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বেশ কিছু প্রান্তিক আদিবাসী গ্রামে শিক্ষার্থীদের পাঠশালা কেন্দ্রিক পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করে চলেছে ‘বোধোদয়’। এ বার সেই জনজাতি পড়ুয়াদের নিয়ে প্রকৃতিপাঠের আয়োজন করল তারা। ওই দুই জেলার শবর, লোধা পড়ুয়াদের পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকার সাঁওতাল ছাত্রছাত্রীরাও যোগ দিয়েছিল জয়পুর জঙ্গলের লোটিহীড় গ্রামে আয়োজিত ওই শিবিরে।

আয়োজকদের অন্যতম বাঁকুড়ার শিক্ষক শোভন গুপ্ত বলেন, ‘‘যারা এত দিন মূলত দূর থেকেই ক্যারাবিনার, হারনেস পরে পাহাড়ে ওঠা, রঙিন টেন্টে তাদেরই সমবয়সিদের রাত কাটানো দেখেছিল, তাদেরকে সেই সুযোগ দেওয়ার ভাবনা এসেছিল আমাদের মনে। শুভানুধ্যায়ী এবং সহযোগীদের সাহায্যে প্রকৃতির সন্তানদের নিয়ে প্রকৃতিপাঠের শিবির আয়োজনের সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে।’’ তিনি জানান মোট ৭৬ জন জনজাতি স্কুলপড়ুয়া যোগদান করেছিল শিবিরে। ক্যাম্প ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন বাবুন কেওরা । ক্যাম্প কমান্ডান্ট বিপ্লব দেবনাথ। ক্যাম্প ম্যানেজারের দায়িত্বে বোধোদয়ের সম্পাদক পান্থদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাঁবু খাটানো, শৈলারোহণ, জঙ্গলে পথ চলার কৌশলের পাশাপাশি ছিল সাপে কাটা নিয়ে সচেতনতা, তারা আর পাখি চেনার ‘ক্লাস’ এমনকি, রান্না শেখার আয়োজনও। আর এক আয়োজক সুপ্রকাশ মণ্ডল জানান, ক্যারাবিনার দিয়ে হারনেস পরিয়ে সমস্ত ধরনের নিরাপত্তা বজায় রেখে রিভার ক্রসিং এবং জিপ লাইনের মতো অ্যাডভেঞ্চার গেম, বিজ্ঞান মঞ্চের সহায়তায় বিজ্ঞান ও কুসংস্কার নিয়ে অনুষ্ঠান, ডাইন প্রথার বিরুদ্ধের অনুষ্ঠান ছিল তিন দিনের প্রকৃতিপাঠ শিবিরে। রিকশায় কলকাতা থেকে লাদাখ গিয়েছিলেন সত্যেন দাস, উনি শিবিরে এসে ওঁর অভিযান কথা বলেছেন। শিক্ষার্থীদের পাখি চেনাতে বিষ্ণুপুর থেকে এসেছিলেন প্রকৃতি আলোকচিত্রী তথা পক্ষী পর্যবেক্ষক দেবার্ণব সেন। বাঁকুড়া জেলার পদস্থ পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও এসেছিলেন শিবির পরিদর্শনে।

Students Camp Nature Tribal student bankura joypur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy