Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩

জঞ্জালের জায়গা বদল

শহরের আর্বজনার স্থায়ী সমাধানের জন্য ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প গড়তে আগেই উদ্যোগী হয়েছিল রঘুনাথপুর পুরসভা।

বাবুগ্রাম পঞ্চায়েতের সিলেটি মৌজায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড গড়তে চাইছে প্রশাসন।

বাবুগ্রাম পঞ্চায়েতের সিলেটি মৌজায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড গড়তে চাইছে প্রশাসন।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

অবশেষে রঘুনাথপুর পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জায়গা বদলই করল প্রশাসন ও পুরসভা। শাঁকা পঞ্চায়েতের রাঙামাটি মৌজার বদলে বাবুগ্রাম পঞ্চায়েতের সিলেটি মৌজায় ডাম্পিং গ্রাউন্ড গড়তে চাইছে প্রশাসন। মহকুমাশাসকের সঙ্গে পুরপ্রধানের কয়েক দফা বৈঠকের পরে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্প্রতি সিলেটি মৌজার ওই তিন একর সরকারি জমি পুরসভার নামে হস্তান্তরের জন্য ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরে আবেদন করেছে পুরসভা। আন্তঃবিভাগীয় জমি হস্তান্তর শেষ হলেই প্রকল্প গড়তে দরপত্র ডাকা হবে। মহকুমাশাসক আশ্বাস দিয়েছেন, জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া দ্রুত মিটবে বলে।

Advertisement

শহরের আর্বজনার স্থায়ী সমাধানের জন্য ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প গড়তে আগেই উদ্যোগী হয়েছিল রঘুনাথপুর পুরসভা। কিন্তু পুরএলাকার মধ্যে কয়েক একর সরকারি জমি না থাকায় পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছিল না। পরে পুরসভা জমির সমস্যা মেটাতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়। শহর থেকে ন’কিলোমিটার দূরে শাঁকা পঞ্চায়েতের রাঙামাটি মৌজায় তিন একর জমি ওই প্রকল্পের জন্য পুরসভাকে দেয় প্রশাসন। পাঁচিল তৈরির জন্য দরপত্রও ডাকে পুরসভা। কিন্তু রাঙামাটি এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেন। শহরের বর্জ্য এনে ফেললে গ্রামের পরিবেশ দূষিত হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

নভেম্বরে পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্যার কথা জানান ভবেশবাবু। তার পরেই ওই প্রকল্প দেখার জন্য এসডিও (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্করকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের পরে প্রকল্পটি নিয়ে পুরপ্রধানের কাছে বিশদে জেনেছিলেন এসডিও। পরে পুরসভা ও ভূমি দফতরকে নিয়ে আরও কয়েকটি বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই আলোচনায় উঠে আসে, শহর থেকে ন’কিলোমিটার দূরে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প গড়ার থেকে শহরের কাছাকাছি কোথাও সেটা হলেই সুবিধা হবে।

Advertisement

এসডিও-র দাবি, রাঙামাটি মৌজার বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় তাঁরা জায়গা বদল করছেন না। অন্য দু’টি কারণের কথা উল্লেখ করছেন তিনি। প্রথমত, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী শুধু একটি পুরসভার জন্য নয়, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প গড়তে হবে আরও কয়েকটি শহরাঞ্চলকে নিয়ে। দ্বিতীয়ত, রাঙামাটি এলাকা রঘুনাথপুর শহর থেকে ন’কিলোমিটার দূরে। আর্বজনা সেখানে নিয়ে গিয়ে ফেলতে খরচ অনেকটাই বেশি পড়বে। পরিবর্তে, শহর থেকে মাত্র দু’কিলোমিটার দূরে সিলেটি মৌজায় ওই প্রকল্প গড়লে বর্জ্য পরিবহণে খরচ অনেকটাই কম হবে। আকাঙ্ক্ষাদেবী বলেন, ‘‘সিলেটি মৌজায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট গড়া হলে সেখানে রঘুনাথপুর শহর-সহ আদ্রা, সড়বড়ি, চেলিয়ামার মত শহরাঞ্চলের আর্বজনা নিয়ে আসতে সমস্যা হবে না। তাই ওই নতুন জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে।”

সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে আর্বজনা পুরোপুরি নষ্ট করে তার থেকে সার, কীটনাশক-সহ আরও বেশ কিছু উপজাত জিনিস তৈরি করা হবে। ফলে আর্বজনার পরিমান বেশি হলে ইচ্ছুক সংস্থাগুলি সেখানে প্রকল্প গড়তে উৎসাহী হবে বলেই মনে করেছে পুরসভা ও প্রশাসন। পুরপ্রধান ভবেশবাবু জানান, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পের জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এবং অর্থ দফতর ইতিমধ্যেই অনুমোদন দিয়েছে।

কিন্তু জায়গা পরিবর্তন হওয়ায় নতুন করে ডিপিআর (ডিটেসল প্রোজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি করে ফের মিউনিসিপ্যাল অ্যাফেয়ার দফতরে পাঠাবেন তাঁরা। পুরপ্রধানের দাবি, যে হেতু প্রকল্পের অনুমোদন আগেই মিলেছে তাই নতুন করে প্রকল্প গড়তে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.