বছর শেষে মেলা বসে পাহাড়ের কোলে। আদিবাসী নাচের ছন্দ আর সুরে মিলে যায় গ্রাম, ঘরে ফেরা মানুষ আর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটক। মিলে যায় ফেলে আসা বছরের সঙ্গে নতুন একটা বছর। গত দু’দশক ধরে শময়িতা মঠের উদ্যোগে শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে আদিবাসী গ্রাম শিউলিবনায় হয়ে আসছে এমনটাই। শনিবার শুরু হয়েছে এই বছরের খেরওয়াল তুখৈ মেলা। এ বারে ২১ তম বর্ষ।
এই বছর খেরওয়াল তুখৈ মেলায় বসেছে একশোটিরও বেশি স্টল। শনিবার মেলার শুরুর দিনে আয়োজন করা হয়েছিল আদিবাসী নৃত্য প্রতিযোগিতার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ দিতে এসেছিল ১৮টি দল। এ ছাড়াও ছিল নানা অনুষ্ঠান। উদ্যোক্তারা জানান, আজ, রবিবার নাটক মঞ্চস্থ হবে।
ছাতনা থানার শিউলিবনা গ্রামে প্রায় ৭০টি আদিবাসী পরিবার বসবাস করে। তাঁদের কাছে এই মেলাটিই সারা বছরের সেরা আকর্ষণ। ঘরে ঘরে আত্মীয়দের ভিড় জমে মেলা উপলক্ষে। বিয়ে হয়ে ভিন গাঁয়ে চলে যাওয়া মেয়ে ফিরে আসে বাড়ি। সঙ্গে আসে স্বামী, সন্তান, শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। শিউলিবনার আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষজন ভিড় করেন মেলায়। মেলাতেই মঠের তরফে খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত থাকে। আর থাকে সারা দেশের লোকসংস্কৃতির নানা অনুষ্ঠান।
শুধু গ্রামবাসীদের কাছেই নয়, শুশুনিয়ায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছেও এই মেলা অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠছে। এ বছেরের মেলার প্রথম দিনেই কুড়ি হাজারেও বেশি মানুষের ভিড় হয়েছিল। ছাতনার হরিপদ মাল, তুফান মালেরা বলেন, “প্রতি বছরই এই মেলা দেখতে আসি।”
শময়িতা মঠের সম্পাদক ঋষিঋদ্ধা অনাহতা বলেন, “প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো আর আদিবাসী সংস্কৃতিকে সবার সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যেই এই মেলার আয়োজন করি আমরা। মেলা শুরুর দিন থেকেই খুব ভাল সাড়া পেয়ে আসছি।”