পাতলই নদীর উপরে সেই রেলিংহীন সেতু।— প্রদীপ মাহাতো
জেলা পরিষদের ভাঁড়ারে সংস্কারের অর্থ নেই। তাই আটকে রয়েছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। পুরুলিয়ার হুড়া ব্লকের করণডি মোড় থেকে কেশরগড় পর্যন্ত একটি রাস্তা নিয়ে এমনই বক্তব্য জেলা পরিষদের।
ওই রাস্তার উপরে পাতলুই নদীর উপরে রয়েছে একটি সেতুও। সেই সেতুর অধিকাংশ রেলিং ভেঙে পড়ে রয়েছে বেশ কয়েক বছর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে এই রাস্তার উপরে থাকা পাতলুই সেতুর নীচে জলের তোড়ে আটকে থাকা এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান ছিল, রেলিং বিহীন সেতুর উপর থেকে ওই ব্যক্তি কোনও ভাবে নদীতে পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন। স্থানীয় মানুষজনেরও সেই ধারণা ছিল। দু’বছর পার হয়ে গেলেও সেতুর উপরে রেলিং নির্মিত হয়নি। ফের বর্ষা আসছে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাই সেতু লাগোয়া রাস্তা ও সেতুর রেলিংয়ের দ্রুত সংস্কার দাবি করেছেন।
বাঁকুড়ার সতীঘাট সেতুর বাতিস্তম্ভের (ইনসেটে) ৬টি মধ্যে ৩টি বাতি
বিকল পাঁচ দিন ধরে। রাতে অন্ধকার সেতুতেই যাতায়াত।— অভিজিৎ সিংহ
হুড়া ব্লকের কেশরগড় যাওয়ার অন্যতম প্রধান রাস্তা এটি। করণডি মোড় থেকে কেশরগড়গামী এই রাস্তার উপরেই পড়ে সেতুটি। নদীর এক পারে আমলাতোড়া, মৌরাংডি, করণডি, অন্য পারে কেশরগড়, চরগালি, কুদলুং-সহ একাধিক গ্রাম। কেশরগরের দিকের গ্রামগুলির বাসিন্দাদের ব্লক সদর হুড়া, লালপুর মোড় বা জেলা সদর পুরুলিয়ায় আসার জন্য এই রাস্তাই ব্যবহার করতে হয়। আবার আমলাতোড়ার দিকের গ্রামের মানুষজন কেশরগড় যাওয়ার জন্য এই রাস্তা ও এই সেতুর উপরেই নির্ভরশীল। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুধু সেতুর অধিকাংশ রেলিংই ভেঙে যায়নি, বেহাল হয়ে রয়েছে রাস্তাটিও। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার ফলে রাস্তাটির বেশ কিছুটা অংশ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চাটুমাদার গ্রামের বাসিন্দা বিপত্তারণ মাহাতো বলেন, ‘‘রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। সামনে বর্ষা আসছে। অবস্থা আরও খারাপ হবে। অবিলম্বে রাস্তা ও সেতুর রেলিংয়ের সংস্কার প্রয়োজন।’’ আমলাতোড়া গ্রামের আবির মাহাতো, অর্জুনজোড়ার শিবপ্রসাদ মাহাতোরাও বলেন, ‘‘সেতু সংলগ্ন রাস্তাটির হাল শোচনীয়। প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।’’
কেশরগড়ের বাসিন্দা, হুড়ার জেলা পরিষদ সদস্য অনিতা চক্রবর্তীও মেনে নিয়েছেন যে, রাস্তাটি বেশ কিছুদিন ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তাটির সংস্কারের দাবি এলাকার মানুষজন আমার কাছে অনেক দিন ধরেই করছেন। সেতুর রেলিংগুলিরও সংস্কার প্রয়োজন। আমি জেলা পরিষদে জানিয়েওছি। ফের বলব।’’ হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুভাষ মাহাতো জানান, ওই রাস্তার সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তাব জেলা পরিষদে পাঠানো হয়েছে। জেলা পরিষদের পূর্ত বিভাগের কর্মাধক্ষ্য সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের তহবিলে বর্তমানে রাস্তা সংস্কারের অর্থ নেই। অর্থ এলে ওই দাবি বিবেচনা করা হবে।
অর্থাৎ, এ বর্ষাতেও রাস্তার হাল ফেরার সম্ভাবনা কার্যত নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy