বিগত কয়েক বছরে সহকর্মীদের হেনস্থা, সরকারি টাকা আত্মসাৎ, ঘুষ নেওয়া-সহ বহু অভিযোগ ছিলই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এ বার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক মহিলা কর্মীকে যৌন হেনস্থার চেষ্টার অভিযোগ উঠল। অভিযুক্ত বোলপুরের তফশিলি জাতি-উপজাতি পড়ুয়াদের জন্য আবাসিক স্কুলের অধ্যক্ষ সুবোধ দাস। জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর বোলপুর থানায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ তো করেইছে, সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর চুক্তি নবীকরণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দফতরের প্রকল্প আধিকারিক সৌমেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘যে ঘটনা ওই মহিলা কর্মীর সঙ্গে ঘটেছে তা পুলিশকেই জানানো উচিত ছিল। যেহেতু তিনি আমাকে জানিয়েছেন আমি পুলিশকে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত ভাবে জানিয়েছি। এর আগেও বহু অভিযোগ সুবোধবাবুর বিরুদ্ধে ছিল। এই ঘটনার পরে চুক্তি নবীকরণ করা হয়নি।’’
কেন্দ্রীয় অর্থ-সাহায্যে বছর পাঁচেক আগে বোলপুর থানার থানা এলাকায় তৈরি হয়েছে তফশিলি জাতি উপজাতি ছেলেমেয়েদের জন্য একলব্য আবাসিক স্কুলটি। তত্বাবধানে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি ক্লাসে ৩০জন করে ছেলে ও মেয়ে মিলে মোট ৪২০জন পড়ুয়ার আসন নির্দিষ্ট। বর্তমানে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩০০ পড়ুয়া রয়েছে। এ বারই মাধ্যমিকে প্রথম ব্যচ। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী মিলিত সংখ্যা ৩৪ জন। সমস্যার মূলে সদ্য অপসারিত অধ্যক্ষ সুবোধ দাস। দফতর সূত্রে খবর ৩১ তরিখেই শেষ হয়েগিয়েছে চুক্তির মেয়াদ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ নিয়মিত তাঁদের প্রতি দুর্ব্যবহার লেগেই ছিল। ছিল আরও নানা অভিযোগ। তার সঙ্গে যুক্ত হয় আবাসিক স্কুলের এক মহিলা অশিক্ষক কর্মী যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলায়। নির্যাতিত ওই মহিলা কর্মীর অভিযোগ, ‘‘প্রথমবার অধ্যক্ষ আবাসনে ডেকে পাঠিয়ে দরজা আটকে আমার উপর যৌন নির্যাতন চালাতে গিয়েছিলেন। কোনও ক্রমে পালিয়ে বেঁচেছি। ঘটনার কথা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জানালে, কাজ হারাতে হবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন। তাই চুপ করে ছিলাম।’’ তাঁর দাবি, এরপরে আরও একদিন মদ্যপ্য অবস্থায় ঢুকে ফের একই অত্যাচার চালাতে গিয়েছিলেন সুবোধবাবু। এবং তিনি চিৎকার করলে পড়ুয়ারা ছুটে আসে। এবং সুবোধবাবু পালিয়ে যান।
গত ৩০ ডিসেম্বর জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরে বিষয়টি লিখিতভাবে জানান নির্যাতিতা। ২ জানুয়ারি বোলপুর থানায় লিখিত অভিযোগ হয়।
অভিযুক্ত সুবোধবাবুর সঙ্গে বহু চেষ্টা করেও যোগযোগ করা যায়নি। তবে সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন তিনি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে একটি পাল্টা অভিযোগ সুবোধবাবুও করেছেন। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে সেটাও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy