—ফাইল চিত্র।
মুকুটমণিপুরেও কমল পরিযায়ী পাখির সংখ্যা। মুকুটমণিপুরের জলাধার এবং লাগোয়া অঞ্চল শীতের মরসুমের কয়েক মাস হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির নিরাপদ ঠিকানা হয়ে ওঠে। সেখানে বন দফতরের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। কেন পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমল মুকুটমণিপুরে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে খবর বন দফতর সূত্রে।
রাজ্যের যে সমস্ত জলাধার পরিযায়ী পাখিদের পছন্দ, তাদের মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরের জলাধার। প্রতি বছর শীতকালে দেশ-বিদেশ থেকে অসংখ্য পাখি পরিযায়ী হিসাবে মুকুটমণিপুর জলাধারে উড়ে আসে। শীতকাল কাটিয়ে সেই পাখির দল আবার ফিরে যায় নিজের নিজের দেশে। মুকুটমণিপুর জলাধারে আসা এই পরিযায়ী পাখির সংখ্যা, তাদের গতিপ্রকৃতি ও স্বভাব জানার জন্য গত পাঁচ বছর ধরে প্রতি বছর জলাধারে পাখি গণনার কাজ করে বন দফতর। পাখি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে জলাধারের বিভিন্ন অংশ ঘুরে সংগ্রহ করা হয় তথ্য ও ছবি। সেই তথ্য ও ছবি বিশ্লেষণ করে পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করে বন দফতর। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার একদল পাখি বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে নিয়ে মুকুটমণিপুর জলাধারে বন দফতর পাখি গণনা করে দেখে, আগের বছরগুলিতে যে সমস্ত প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছিল, তার মধ্যে কয়েকটি প্রজাতির পাখি এ বার আর মুকুটমণিপুর আসেনি। এর মধ্যে অন্যতম কমন পচার্ড ও ভূতিহাঁস প্রজাতির পাখি একটিও চোখে পড়েনি সমীক্ষকদের। উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে রুফার্স টেইল্ডলার্ক ও নর্দার্ন পিনটেইল প্রজাতির পাখির সংখ্যাও। এই পরিসংখ্যান হাতে আসতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কী পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ এই পরিযায়ী পাখির দল এ বার মুকুটমণিপুর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে?
এখনই এমন সম্ভাবনা জোরালো না হলেও পক্ষী বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ পাত্র বলেন, ‘‘পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড় থেকে শুরু করে গোটা কংসাবতী উপত্যকায় কৃষিকাজে বহুল ভাবে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে। জলের সাহায্যে তা এসে পড়ছে মুকুটমণিপুর জলাধারে। ফলে জলাধারে যেমন ছোট মাছের সংখ্যা কমেছে, তেমনই জলে থাকা বিভিন্ন প্লাঙ্কটনের পরিমাণও কমছে। তার জেরেই এমনটা হয়ে থাকতে পারে।’’ বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের এডিএফও অসিতকুমার দাস বলেন, ‘‘এ বছর পরিযায়ী পাখির সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। পাখি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের ধারণা, মুকুটমণিপুর জলাধারে যন্ত্রচালিত নৌকা চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মাছ ধরার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার ফলেই এমনটা হয়েছে। দুটো বিষয়ই যাতে নিয়ন্ত্রিত ভাবে হয়, সে ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy