Advertisement
E-Paper

ঝড়ে উড়ল মান্ডির ছাদ, মৃত এক

গত কয়েক দিন ধরে রোদ পড়ার আগে পর্যন্ত খুব ঠেকায় না পড়লে কেউ বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন না। শনিবার বিকেলে দুই জেলায় ঝড় বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি মিলল। তবে ক্ষয়ক্ষতিও কম হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৫৮
ধ্বস্ত: উড়ে গিয়েছে মানবাজারের কিসান মান্ডির ছাউনি। নিজস্ব চিত্র

ধ্বস্ত: উড়ে গিয়েছে মানবাজারের কিসান মান্ডির ছাউনি। নিজস্ব চিত্র

গত কয়েক দিন ধরে রোদ পড়ার আগে পর্যন্ত খুব ঠেকায় না পড়লে কেউ বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন না। শনিবার বিকেলে দুই জেলায় ঝড় বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি মিলল। তবে ক্ষয়ক্ষতিও কম হয়নি।

বিষ্ণুপুরের গোকুলনগরে রবিবার ঝড়ে পড়া গাছের ডাল কাটতে গিয়ে মাথায় গাছের ডালের আঘাতে মারা যান এক ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বাবলু দুলে (৩৫)। গাছের ডাল ইলেকট্রিক তারে প়ড়ে পরিষেবা বিঘ্নিত হয়।

শনিবার বিকেল ৩টে থেকে একটু একটু করে পুরুলিয়ার আকাশের রঙ বদলাতে শুরু করে। আদ্রা, রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া শহর ও পুরুলিয়া ২ ব্লক এলাকার বেশ কিছু জায়গায় বিকেলে বিক্ষিপ্ত ভাবে শিলাবৃষ্টি হয়। পুরুলিয়া ২ ব্লকের কুস্তাউরে মিনিট পনেরো ধরে বড় আকারের শিল পড়েছে।

দক্ষিণ পুরুলিয়ার মানবাজার, বরাবাজার, কেন্দা-সহ বেশ কিছু এলাকায় সন্ধ্যার একটু আগে ঝোড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়। বিডিও (মানবাজার ১) সত্যজিৎ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ঝড়ে মানবাজার থানার সিন্দুরপুর গ্রামের দু’টি বাড়ির খড়ের চালা উড়ে গিয়েছে। কিসান মান্ডির টিনের চালা উড়ে বিদ্যুতের স্তম্ভে আটকে গিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে মেরামতির করা হচ্ছে।’’

কিষাণ মান্ডির মাংস বিক্রেতা নিমাই গরাই, মাছ বিক্রেতা কালীপদ ধীবর বলেন, ‘‘শনিবার বিকেলে আমরা দোকানেই ছিলাম। সন্ধ্যায় হঠাৎ ঝড় আর শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। বিকট শব্দ করে টিনের ছাদটা উড়ে গিয়ে বিদ্যুতের স্তম্ভে আটকে গেল। আমরা ভয়ে দৌড়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিই।’’

শিলাবৃষ্টির ফলে তরমুজ চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কংসাবতী, কুমারী, টটকো নদীর চরে এই মরসুমে তরমুজ চাষ হয়। বরাবাজার থানার যাদুডি, অযোধ্যাডি, মানবাজার থানার মানপুর, ধানাড়া এলাকায় তরমুজ চাষিরা কিছু দিন হল জমি থেকে তরমুজ তোলা শুরু করেছিলেন।

মানবাজার ব্লকের সহকারী কৃষি অধিকর্তা অর্ক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে তা জানতে এলাকায় খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে।’’ মানপুর গ্রামের চাষি বিশ্বনাথ বাউরি। স্বপন বাউরিরা বলেন, ‘‘চাষে মোটা টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। শিলার আঘাতে তরমুজ ফুটো হয়ে পচন ধরতে শুরু করে। তরমুজের গায়ে দাগ থাকলে দামও মেলে না। অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।’’

মানবাজার মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, ‘‘শনিবারের ঝড় আর শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না জানতে বিডিওদের সঙ্গে কথা বলছি। তবে প্রাথমিক রিপোর্টে তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানা গিয়েছে।’’

পরপর দু’দিন কালবৈশাখীর জেরে তাপমাত্রা কমে স্বস্তি ফিরেছে বাঁকুড়ায়। জেলা আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেলে বাঁকুড়ায় ৩০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয় সঙ্গে ১০.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিও হয়। এতে জেলার তাপমাত্রা ৩৭.৮ ডিগ্রি থেকে এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যায়।

রবিবার বিকেলে ২৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয় ও বিকেল পর্যন্ত ৮.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

শনিবার ঘণ্টা খানেকের ঝড়ে বিষ্ণুপুরের জয়পুর ব্লকের প্রসাদপুর, গোকুলনগর, বীরভানুপুর, উপরমুড়ি-সহ বিভিন্ন গ্রামে প্রচুর গাছ পড়েছে। রবি শস্যেরেও ক্ষতি হয়েছে বলে চাষিদের দাবি।

জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, শনিবারের ঝড়-বৃষ্টিতে সিমলাপাল ব্লকে কিছু ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে রিপোর্ট এসেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রবিবারের ঝড়ে কোনও ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট সন্ধ্যে পর্যন্ত জানা যায়নি।

Kalbaishakhi কালবৈশাখী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy