শীতে: শুক্রবার সকালে বাঁকুড়া শহরে চায়ের দোকানে চলছে আগুন পোহানো। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
নিম্নচাপে হোঁচট খেয়েছিল হিমেল উত্তুরে হাওয়াকে। শীতের আমেজ না পেয়ে বড়দিন আর বর্ষশেষে আক্ষেপ করেছিলেন অনেকেই। উৎসবের মেজাজ কাটিয়ে যখন কাজমুখো হয়েছে বাঁকুড়াবাসী, তখনই হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল শীত। জবুথবু সবাই। এ দিকে, মন উড়ুউড়ু ভ্রমণরসিকদের। পারদ যত নামছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জেলার পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে ভিড়। কান ঢাকা টুপি পড়ে হাসি মুখে দোকান সামলাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, বুধ ও বৃহস্পতিবার ছিল চলতি মরসুমে জেলার শীতলতম দিন। ওই দু’দিনই তাপমাত্রা নেমেছিল ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। শুক্রবারও তাপমাত্রার পারদ নিম্নমুখীই রয়েছে। হাওয়া অফিসের তথ্য জানান দিচ্ছে, গত সাত দিন ধরে পারদ ক্রমশ নামছে। বছরের প্রথম দিন, সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার ও বুধবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ১১.৯ এবং ১১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আপাতত শীত-আমুদে মানুষজনের জন্য রয়েছে আশার খবর। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আগামী কয়েক দিনও পারদ অধোগামী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাঁকুড়ার লালবাজারের যুবক বিধান দত্ত বলেন, “বড়দিনে মুকুটমণিপুরে গিয়ে অস্বস্তি হচ্ছিল। শীত কই! দিনভর জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে ঘুরেছি। চড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকাই মুশকিল হচ্ছিল। ভেবেছিলাম শীত হয়তো এই বছর আর পড়বেই না।”
বুধবার থেকে আক্ষেপ মিটেছে তাঁর। বিধানবাবু বলেন, “ছুটি কেটে যাওয়ার পরে শীত পড়েল। ভাবছি এক দিন ছুটি নিয়ে টুক করে ঘুরে আসব।’’ কেন্দুয়াডিহির বাসিন্দা, বেসরকারি সংস্থার কর্মী অভিনব পাত্র বলেন, “ভাবছিলাম এ বার আর যাওয়াই হবে না। অমনি শীতটা পড়ে গেল। রবিবারের পরিবার নিয়ে যাচ্ছি মুকুটমণিপুরে।”
বৃহস্পতিবার জেলার পর্যটনকেন্দ্র মুকুটমণিপুর ও শুশুনিয়ায় জমাটি ভিড় দেখা গিয়েছে। শুশুনিয়ার পাথরশিল্পী বাবলু কর্মকার বলেন, “বড়দিন আর পয়লা জানুয়ারি ভিড় হয়েছিল। কিন্তু শীত না থাকায় তার পরে আর হচ্ছিল না। ছবিটা আবার বদলে গেছে দু’দিনে।” আগামী কয়েক দিন ঠান্ডাটা থাকলে ব্যবসা বেশ ভালই জমবে বলে আশা তাঁর।
পারদ নামতে শুরু করার পরে জনজীবনেও শীতের চেনা ছবি ফিরে এসেছে। দিনভর ঝলমলে রোদে শীতের পোশাক পরে ঠকঠক করে কাঁপছে মানুষ। সন্ধ্যের পরে শহরের অলিগলিতে আগুন জ্বেলে চলছে হাত-পা সেঁকা। রাত একটু গড়াতেই রাস্তা ঘাট সুনসান। বাঁকুড়ার যুবক সন্দীপ সরকার, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, “সকালে লেপ ছেড়ে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়ছে। মোটরবাইক, সাইকেল চালালে হাত ঠান্ডায় হিম হয়ে যাচ্ছে। রাতে আগুন জ্বেলে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছি।”
তবে এই ঠান্ডা কুড়ি ওভারের টি-টুয়েন্টিতে ফুরিয়ে যাবে নাকি লম্বা টেস্ট ম্যাচ খেলবে, সেটা নিয়েই আপাতত চলছে চর্চা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy