শুরু: মানবাজারের এসডিও অফিস। ছবি: সমীর দত্ত
ছিল কমিউনিটি হল। তাই এখন বদলে গিয়েছে মহকুমাশাসকের অফিসে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পরের দিন শুক্রবার থেকেই মানবাজারে মহকুমাশাসকের অফিস চালু হয়ে গেল।
মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তায় পাথরমহড়া গ্রামের ভিতরে, মানবাজার ব্লক অফিসের অধীনে ‘মালঞ্চ’ নামে একটি দোতলা কমিউনিটি হল ছিল। সেই দোতলা ভবনকে সাফসুতরো করে মহকুমাশাসকের অফিসে পরিণত করা হয়েছে। পাকা রাস্তা থেকে দু’মিনিট হাঁটলে নীল-সাদা রঙের ভবনটি দূর থেকে চোখে পড়ে। দেখা গেল, দরজার উপরে টাঙানো হয়েছে, ‘মহকুমাশাসকের করণ’ লেখা বোর্ড। দোতলায় আরও একটি বোর্ড। মাথায় উড়ছে জাতীয় পতাকা।
বেলা ১২টা। মহকুমাশাসকের অফিসে তখন সাধারণ মানুষের ভিড়। দরজার সামনে টেবিল পেতে দুই কর্মী বাইরের মানুষদের আনাগোনা সামলাচ্ছিলেন। লিখিত অভিযোগ থাকলে তাও নিচ্ছেন। মানবাজার থানার কুঁয়োরডি গ্রামের ঠাকুরদাস মাহাতো, জয়দেব মাহাতো এবং খুদিডি গ্রামের সুবোধ মাহাতো, লক্ষ্মণ মাহাতোরা বন দফতরের কাছে টাকা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগপত্র জমা দিলেন। তাঁরা বলেন, ‘‘ব্লক অফিসে আগেই জানিয়েছি। এসডিও-বাবুর কাছেও দিলাম। আশা করি তাড়াতাড়ি সুবিচার পাব।’’
দোতলায় নিজের চেম্বারে তখন অবশ্য মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল ছিলেন না। মুখ্যমন্ত্রী তখন পুরুলিয়া ছেড়ে আসানসোলে রওনা দিচ্ছিলেন। ফলে জেলার প্রায় সমস্ত শীর্ষ আধিকারিকেরা পুরুলিয়া ছেড়ে নড়তে পারেননি। সেখান থেকে সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘জেলা সদরে কিছু কাগজপত্রের কাজ রয়েছে। সেগুলো সেরেই ফিরে যাব।’’ তবে বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি একবার নতুন অফিস ঘুরে গিয়েছেন।
মানবাজার-বান্দোয়ান রাস্তার উপর বিসরি পঞ্চায়েতের পুরনো দোতলা ভবন এসডিপিও-র অফিস হিসেবে সাজানো হয়েছে। নিচের তলায় তাঁর অফিস হচ্ছে। তবে এ দিন ওই অফিস চালু হয়নি।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘মহকুমাশাসকের অফিস চালু হলেও পরিকাঠামো গড়ে না ওঠা পর্যন্ত প্রাথমিক ভাবে মানবাজার ১ ব্লক অফিসের সহায়তা নিয়েই ওখানে কাজ করতে হবে। ব্লক অফিস থেকে মহকুমা অফিসের দূরত্ব হাঁটা পথে পাঁচ মিনিট। আপাতত মানবাজারে এসডিও এবং এসডিপিও বসবেন। তারপর ধীরে ধীরে অন্যান্য দফতরের আধিকারিকেরাও বসবেন।
গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মধ্যে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর, খাজাঞ্চিখানা এবং পরিবহণ বিভাগ এসডিও-র হাতে থাকার কথা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এসডিও ছাড়া মহকুমা অফিসে আরও অন্তত এক থেকে দু’জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এ ছাড়া ট্রেজারি অফিসার, পরিবহণ বিভাগের আধিকারিক, খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের আধিকারিক, মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক, সহকারী শ্রম মহাধ্যক্ষ প্রমুখ একে একে দায়িত্বে আসবেন।
মহকুমা আদালত বসছে ব্লক অফিসের ভিতরে রাজীব গাঁধী সেবা কেন্দ্র ভবন এবং মানভূম ভবনে। সেই মতো গোছানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
কৌতূহলী লোকজন উঁকিঝুঁকি মারছেন রং-চঙে নতুন ভবনগুলোতে। পাড়ার ঠেকে, চায়ের দোকান থেকে গৃহস্থের হেঁশেলেও এখন নতুন মহকুমার ফলে কী কী সুবিধা মিলবে, কী সমস্যা কাটল তা নিয়েই জোর জল্পনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy