E-Paper

ত্রাণ শিবিরে মন্ত্রী, খাবার না পেয়ে বিক্ষোভ অন্যত্র

পাঁচমুড়ায় মন্ত্রীর কর্মসূচি যখন চলছে, পাশের গ্রাম রাধানগরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে খাবার না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ০৯:৩৩
তালড্যাংরা-পাঁচমুড়া রাজ্য সড়কে চলছে অবরোধ।

তালড্যাংরা-পাঁচমুড়া রাজ্য সড়কে চলছে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র।

সাম্প্রতিক দুর্যোগে বাঁকুড়া জেলায় ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে এলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। শনিবার তালড্যাংরা ও সিমলাপালের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন তিনি। পরিদর্শনের সময়ে অন্য এক ত্রাণ শিবিরে খাবার না মেলার অভিযোগে চলল বিক্ষোভও।

এ দিন দুপুরে প্রথমে তালড্যাংরার পাঁচমুড়া হাই স্কুলের ত্রাণ শিবিরে যান মন্ত্রী। সেখানে দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে প্রশাসনিক বৈঠক করেন। বৈঠকে ছিলেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি, সভাধিপতি অনসূয়া রায়, তালড্যাংরার বিধায়ক ফাল্গুনী সিংহবাবু, জেলাশাসক সিয়াদ এন, জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি প্রমুখ। বৈঠক শেষে দুর্গতদের ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন মন্ত্রী। পরে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এলাকা পরিদর্শনে এসেছি। দুর্গতদের ত্রাণ বিলি করা হল। সমস্ত বিপর্যস্ত মানুষের পাশে প্রশাসন রয়েছে।” পাঁচমুড়ার কর্মসূচি শেষে মন্ত্রী যান সিমলাপালে। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট, কজ়ওয়ে পরিদর্শন করে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন।

পাঁচমুড়ায় মন্ত্রীর কর্মসূচি যখন চলছে, পাশের গ্রাম রাধানগরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ত্রাণ শিবিরে খাবার না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। তালড্যাংরা-পাঁচমুড়া রাজ্য সড়কের রাধানগর বাসস্টপে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, গত দু’দিন শিবিরে খাবার পেলেও শুক্রবার রাত থেকে খাবার মেলেনি। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে রাধানগর গ্রামের মণি দুলে, নয়নতারা দুলেরা বলেন, “জলে ঘর-বাড়ি ভেঙেছে। এখন খাবারটুকুও দিচ্ছে না প্রশাসন। তাই পথে নামতে হয়েছে।”

খবর পেয়ে অবরোধস্থলে যান তালড্যাংরা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গণেশচন্দ্র রায়। তিনি বাসিন্দাদের বুঝিয়ে অবরোধ তোলেন। তবে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অবরোধের জেরে আটকে পড়ে গাড়ি। সভাপতির দাবি, পাঁচমুড়া হাই স্কুলের ত্রাণ শিবিরে রান্না করে এলাকার বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে পৌঁছনো হচ্ছে। এ দিন মন্ত্রীর পরিদর্শনের জেরে বিভিন্ন শিবিরে খাবার পৌঁছতে একটু দেরি হয়েছে। তবে সকলেই খাবার পেয়েছেন।

এ দিকে, তালড্যাংরা ও সিমলাপালে বানভাসি পরিস্থিতির জন্য মন্ত্রী ডিভিসির জল ছাড়াকে দায়ী করার ঘটনায় বিতর্ক বেধেছে। মন্ত্রীর দাবি, “ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই ডিভিসির ড্যামগুলি থেকে জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতেই এই পরিস্থিতি।” তবে শিলাবতী বা জয়পণ্ডা নদীতে তো ডিভিসির কোনও ড্যাম নেই। তা ছাড়া, ডিভিসির ড্যাম থাকা দামোদর নদের সঙ্গে ওই দু’টি নদী তো মেশেইনি। তাতে মন্ত্রী বলেন, “ডিভিসি বেশি মাত্রায় জল ছাড়লে বাড়তি জল এখানের নদীতে চলে আসে। প্রতিটি নদীই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। মাইথন বা পাঞ্চেত ড্যাম থেকে জল ছেড়ে দিলেও এ দিকে সেই জলের একাংশ চলে আসে।”

মলয়ের দাবি নিয়ে বিজেপি নেতা সুভাষ সরকারের কটাক্ষ, “উনি কোন ভূগোল বই পড়ে এমন মন্তব্য করছেন, জানা নেই। দামোদরের সঙ্গে শিলাবতী বা দক্ষিণ বাঁকুড়ার নদীগুলির কোনও সম্পর্ক নেই।” বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের ভূগোলের শিক্ষক সুব্রত পানও জানান, ডিভিসির সব বাঁধ দামোদর নদে। আর দামোদর এবং শিলাবতী বা জয়পণ্ডা ভৌগোলিক ভাবে দু’টি পৃথক নদীতন্ত্র। ফলে একের জল বাড়ার প্রভাব অন্যতে পড়ার কারণই নেই।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

bankura

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy