E-Paper

নামছে জলস্তর, উদ্বেগ জেলা জুড়েই

জেলার একটা বড় অংশ এমনিতেই রুক্ষ, খরাপ্রবণ। তার উপরে বনভূমির  পরিমাণও বেশ কম। তারই সঙ্গে উদ্বেগ বাড়িয়ে ভূগর্ভস্থ জলস্তর দ্রুত নামছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।

দয়াল সেনগুপ্ত 

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ০৮:৩৬
এক ব্যক্তির পাম্প থেকে তোলা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ জল। তাই ভরসা গ্রামবাসীর। মহম্মদবাজারের শ্রীরামপুর গ্রামে। ছবি: পাপাই বাগদি

এক ব্যক্তির পাম্প থেকে তোলা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ জল। তাই ভরসা গ্রামবাসীর। মহম্মদবাজারের শ্রীরামপুর গ্রামে। ছবি: পাপাই বাগদি

দেড় বছর ধরে বন্ধ একশো দিনের কাজের টাকা। ফলে, ব্যাহত হচ্ছে জলাশয় দেখভালের কাজ। যার প্রভাব পড়তে পারে জেলার ভূগর্ভস্ত জলস্তরে। এমনই আশঙ্কা জেলা প্রশাসনের। সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এ কথা ফের চর্চায় উঠে এল। কারণ, জলস্তর নেমে যাওয়ায় বীরভূমের একটা বড় অংশ এখনই জলসঙ্কট ভুগছে।

জেলার একটা বড় অংশ এমনিতেই রুক্ষ, খরাপ্রবণ। তার উপরে বনভূমির পরিমাণও বেশ কম। তারই সঙ্গে উদ্বেগ বাড়িয়ে ভূগর্ভস্থ জলস্তর দ্রুত নামছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। গত বার বৃষ্টির ঘাটতি ছিল। শুকিয়ে গিয়েছিল খাল, বিল, পুকুর, নদী-সহ জেলার বিভিন্ন জলাশয়। জল ছিল না জলাধারেও। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, এর পিছনে অন্যতম কারণ বৃষ্টির জলকে ঠিক মতো কাজে লাগাতে না পারা। পাশাপাশি, রয়েছে ভূগর্ভস্থ জলের বেহিসেবি ব্যবহার। লাগামছাড়া অপচয়। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে, যে এ বছরের প্রখর গ্রীষ্মে গবাদি পশুর স্নান, খাওয়ার জলও অমিল।

পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, সব এলাকায় সমান ভৌমজল থাকে না। বীরভূমের একটা অংশ তেমনই। এ রাজ্যের ৭০টি ব্লকে ভূগর্ভস্থ জলস্তর ক্রমশই নামছে। বীরভূমের চারটি ব্লককে ‘সেমি ক্রিটিক্যাল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, বৃষ্টির খামখেয়ালিপনা থাকলেও সারা বছরে বীরভূমে ১,২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। কিন্তু তার অনেকটাই নদী, নালা দিয়ে মুর্শিদাবাদের দিকে যায়। জলাশয় তৈরি এবং বৃক্ষরোপণ এটা রুখতে পারে।

বছর দুই আগে বীরভূম প্রশাসনকে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পকে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুকুর কেটে, জলবিভাজিকা তৈরি করে, গাছ লাগিয়ে বৃষ্টির জলকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে প্রশাসন। কিন্ত গত দেড় বছর ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ থাকায় সেটা ব্যাহত হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। তারই প্রভাব পড়েছে জল সংরক্ষণে।

প্রশাসনের তথ্য বলছে, কাগজেকলমে ১১-১২ সাল থেকে গোটা জেলায় ২৭ হাজারের বেশি পুকুর কাটানো বা সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু ১৬ সালের আগে পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজে কাটা পুকুরগুলির কী অবস্থা রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, গত দেড় বছর একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ থাকায় জলাশয় সংরক্ষণে সমস্যা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

World Environment Day Water crisis Suri

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy