E-Paper

ব্যবসায়ী হত্যায় ধৃত ঝাড়খণ্ডের ভাড়াটে খুনি

গত রবিবার শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকার নিরিষা পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন সুদীপ। ময়না তদন্তে তাঁর দেহ থেকে দু’টি গুলি উদ্ধার হয়।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৫ ০৭:১৫
রামপুরহাট আদালতে তোলা হচ্ছে সনাতন মারিয়াকে। রবিবার।

রামপুরহাট আদালতে তোলা হচ্ছে সনাতন মারিয়াকে। রবিবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম ।

রামপুরহাটের শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চলের ডাম্পার ব্যবসায়ী সুদীপ বাস্কিকে খুনের ঘটনায় শনিবার ঝাড়খণ্ডের এক ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সনাতন মারিয়া। ঝাড়খণ্ডের মহেশপুর থানার ডুমুরঘাটি গ্রামে বাড়ি। রবিবার সনাতনকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হলে বিচারক দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। সুদীপ খুনের ঘটনায় এ নিয়ে ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ। অর্থের লেনদেন নিয়ে বিবাদের জেরেই যে সুদীপ খুন হয়েছিলেন তা আগেই জানিয়েছিল পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। আরও কিছু থাকলে ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পাবে।’’

গত রবিবার শালবাদরা পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকার নিরিষা পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন সুদীপ। ময়না তদন্তে তাঁর দেহ থেকে দু’টি গুলি উদ্ধার হয়। প্রথমে ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ার জেরে খুনের আশঙ্কার কথা উঠে এলেও পরে পুলিশি তদন্তে অন্য আশঙ্কার কথাও উঠে আসে। পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন, ঘটনার সঙ্গে অর্থের লেনদেনের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার চার দিনের মাথায় চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতেরা ছিল অলদেন বাস্কি, রাজেন টুডু, অক্ষয় মির্ধা ও অমিত টুডু। ধৃত চার জনই রামপুরহাট থানার শুলুঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা। সুদীপও একই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন।

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত চার জনকে জেরা করে জানা যায় পূর্ব পরিকল্পনা করে সুদীপকে খুন করা হয়েছে। এ জন্য দিন ১৫ আগে ঝাড়খণ্ডের শার্প শুটার সনাতনকে ভাড়া করেছিল ধৃতেরা। খুনের আগে সনাতন জায়গাটি পর্যবেক্ষণ করেও গিয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, ছিনতাইয়ের মতো সাজিয়ে আড়াল থেকে গুলি করে সুদীপকে খুন করা হবে। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, পরিকল্পনা মতোই পিস্তল জাতীয় আগ্নেয়াস্ত্র বুকে ঠেকিয়ে সুদীপকে গুলি করা হয়েছিল।

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় ধৃতেরা খুনের কথা স্বীকার এবং সনাতনের নাম বলে। তদন্তের জন্য নজর-ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেখানে সনাতনকে দেখা যায়। ঘটনার পরে সনাতন ডুমুরঘাটি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিল বলে পুলিশ জানায়। তবে ঠিক কত টাকা দিয়ে সনাতনকে ভাড়া করা হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, গাড়িতে বোল্ডার বোঝাই করার জন্য পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সপ্তাহান্তে টন পিছু দশ টাকা করে কমিশন আদায় করত সুদীপ-সহ আরও কয়েকজন। এ অর্থের লেনদেন নিয়ে সুদীপের সঙ্গে রাজেন ওরফে মোটু, অলদেন, অক্ষয় ও অমিতের বিবাদ হয়। ঘটনার মাসখানেক আগে সুদীপ এবং আরও এক জনকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় ওই যুবকরা। সুদীপের বাবা নলেজ বাস্কি জানান, হুমকি পরে গ্রামের মাঝি হারামের কাছে ওই যুবকদের নিয়ে বৈঠক হয়। তার পরেও যে ছেলেকে খুন করা হবে তা বুঝতে পারেননি বলে নলেজের দাবি।

সরকারি আইনজীবী মনিরুল হক জানান, সনাতনের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। খুনের সময়ে ব্যবহার করা মোটরবাইক, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এর সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে। তাই আদালতে দশ দিনের পুলিশি হেফাজত চাওয়া হয়। আদালত সে দাবি মঞ্জুর করেছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Rampurhat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy