Advertisement
২৩ মে ২০২৪

দুর্ঘটনা প্রাণ নিল পুলিশের

ফাঁড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন খুব ভোরে। পথেই তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল বেপরোয়া একটি চার চাকা যান। সোমবার ভোরে রামপুরহাট–সাঁইথিয়া সড়কে, রামপুরহাট থানার কৌড় গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সুভাষ দত্তের (৪৫)।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত অটো। —নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনাগ্রস্ত অটো। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৪২
Share: Save:

ফাঁড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন খুব ভোরে। পথেই তাঁর প্রাণ কেড়ে নিল বেপরোয়া একটি চার চাকা যান। সোমবার ভোরে রামপুরহাট–সাঁইথিয়া সড়কে, রামপুরহাট থানার কৌড় গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল সুভাষ দত্তের (৪৫)। তিনি ছিলেন তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই। সুভাষবাবুর আদি বাড়ি বর্ধমানের চিত্তরঞ্জন এলাকার রূপনারায়ণপুরে হলেও তিনি দীর্ঘ দিন ধরে সিউড়ি পুলিশ কোয়ার্টারেই পরিবার নিয়ে থাকতেন। সম্প্রতি সিউড়িতে পুলিশ লাইন মাঠের পিছনে নিজস্ব বাড়িতে পরিবারকে নিয়ে উঠেছিলেন। মাস তিনেক আগেই মাড়গ্রাম থানার অধীনে থাকা তারাপীঠ পুলিশ ফাঁড়িতে এএসআই পদে যোগ দিয়েছিলেন। এসডিপিও (রামপুরহাট) জোবি থমাস কে এ দিন বলেন, ‘‘সুভাষবাবু অফিসের কাজেই মাড়গ্রাম থানায় যাচ্ছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তিনি মারা যান।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ তারাপীঠ ফাঁড়ি থেকে রামপুরহাটগামী একটি অটোয় চড়েন সুভাষবাবু। পথে স্থানীয় কৌড় গ্রামের কাছে বিপরীত দিক থেকে আসা তারাপীঠমুখী একটি চার চাকা গাড়ি ওই অটোকে ধাক্কা মারে। টাল সামলাতে না পেরে রাস্তার ধারে উল্টে পড়ে যায় অটো। গুরুতর জখম হন সুভাষবাবু এবং অটো চালক আরমান শেখ। পথে দু’জনকে ওই অবস্থায় তাঁদের দেখতে পেয়ে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন অন্য অটোচালকেরা। ঘণ্টাখানেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ মারা যান সুভাষবাবু। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয় স্থানীয় বগটুই পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা, অটোচালক আরমান শেখকে। দুর্ঘটনার পরেই ঘাতক গাড়ি চালক এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বলে অভিযুক্ত। পরে অবশ্য রামপুরহাট থানায় আত্মসমর্পণ করেন তারাপীঠেরই একটি লজের নিজস্ব গাড়ির ওই চালক।

এ দিকে, সকাল সকালই সুভাষবাবুর মৃত্যুর খবর পৌঁছে যায় সিউড়ি পুলিশ লাইনের কোয়ার্টারে পৌঁছে যায়। সেখানকার পুলিশ কর্মীরাই পাশে থাকা সুভাষবাবুর বাড়িতে ঘটনার কথা জানান। সকাল ৯টা নাগাদ সুভাষবাবুর স্ত্রী সোমা দত্ত একমাত্র মেয়ে কলেজ পড়ুয়া মিমিকে নিয়ে পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে রামপুরহাট হাসপাতালে এসে পৌঁছন। হাসপাতালে এসে স্বামীর মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন সোমাদেবী। কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠেন, ‘‘তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবে বলেছিলে। এই কি তোমার বাড়ি আসা!” কান্নায় ভেঙে মেয়েও। তিনি বলে ওঠেন, “তোমরা কেউ বলবে না আমার বাবা বেঁচে নেই। আমার বাবা আমার কাছে বেঁচে আছে’’। দুপুরে মৃতদেহ ময়না-তদন্ত হওয়ার পরে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয় শ্রীফলা পুলিশ কোয়ার্টারে সুভাষবাবুকে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police road accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE