পুলিশের পরীক্ষার মুখে গাড়ির চালক।নিজস্ব চিত্র।
সুকুমার রায়ের ‘গন্ধবিচার’ ছড়ায় রাজ দরবারে হাজির বৃদ্ধ এক নাজির গন্ধ শুঁকে মুশকিল আসান করেছিল। সেই নজিরের ভূমিকায় এখন হাল আমলের ‘ব্রিদ অ্যানালাইজার’। আপনি মদ্যপ কিনা, সেটা ধরাই যে যন্ত্রের একমাত্র কাজ!
রাতের পুরুলিয়া শহর কিংবা শহর লাগোয়া রাস্তাঘাটে হলে এখন শুধু ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজপত্র দেখিয়ে পার পাওয়া যাবে না। গন্ধ-পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হতে হবে। না হলে জরিমানা থেকে শুরু করে সাময়িক ভাবে আটক করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই কড়াকড়ি শুরু হতে হাতেনাতে সাফল্য মিলিছে বলেও দাবি করেন সদ্য প্রাক্তন জেলার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার।
কী ভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে? জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, রাতের বেলায় ডিউটিতে থাকা পুলিশ কর্মীদের হাতে ব্রিদ অ্যানালাইজার দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে রুটিন কাগজপত্র দেখতে চাওয়ার পাশাপাশি চালকের মুখে সন্দেহজনক গন্ধ পেলে এই যন্ত্রে ফুঁ দিতে বলা হচ্ছে। মদ্যপ অবস্থায় থাকলে ফুঁ দিলেই যন্ত্রে কাঁটা ৩০ মিলিগ্রামের ঘর পার হয়ে যাচ্ছে। তেমনটা হলেই সংশ্লিষ্ট চালকের বিরুদ্ধে ১৮৫ ধারা মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাতের রাস্তায় ডিউটি করা এক পুলিশ কর্মী জানালেন, নেশাগ্রস্ত চালককে জরিমানা করার পাশাপাশি নেশা না কাটা পর্যন্ত আটক করেও রাখা হচ্ছে। কেননা, জরিমানা দিয়ে সাময়িক ভাবে পার পেয়ে গেলেও ওই অবস্থায় গাড়ি চালালে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি জানালেন, নেশা কাটলে ফের ফুঁ দিয়ে মাত্রা বুঝে তবেই ছাড়া হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যবস্থা চালু করার পরে অনেকের বিরুদ্ধেই মোটর ভেইক্যাল আইনের নির্দিষ্ট ধারা মোতাবেক মামলা করা হয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে পাঁচশো-হাজারের জটে কিছু দিনের জন্য জরিমানায় ছাড় দেওয়া হলেও এখন তা ফের চালু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। ডিসেম্বর মাসেই যেমন ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় রাশ টানতে এই পদক্ষেপ কার্যকারী হবে বলে আশা জেলার পুলিশ কর্তাদের।
কলকাতা বা জেলার কিছু শহরে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ অবশ্য নতুন নয়। তবে এ বছরের মার্চের আগে পর্যন্ত তার সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। মার্চ থেকে কলকাতার প্রত্যেক ট্রাফিক গার্ড ওই যন্ত্র পেয়ে গিয়েছে। ভিন্-রাজ্যেও চালু রয়েছে ‘ব্রিদ অ্যানালাইজার’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy