দগ্ধ: এই ঘরেই আগুনে পুড়েছেন ওই গৃহবধূ। মোহনপুরে। —নিজস্ব চিত্র
অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে নানুর থানার মোহনপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মৃতের পরিবারের তরফে ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই তরুণীর স্বামী অমর মেটে, শাশুড়ি বেলে মেটে সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্ত শুরু করেছে নানুর থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম সরস্বতী মেটে (২০)। তাঁর বাপের বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার নবগ্রামে। ২০১৮ সালে নানুর থানার মোহনপুরের অমর মেটের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। অমর লরিচালক। ওই তরুণীর পরিবারের দাবি, বরপক্ষের দাবিমতো যৌতুক দিয়ে মেয়ের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের কয়েক দিন পরে সরস্বতী জানতে পারেন, তাঁর স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। তার প্রতিবাদ করায় মাঝেমধ্যেই ওই তরুণীকে মারধর করা হতো বলে তাঁর পরিজনদের অভিযোগ। দিন দিন অত্যাচার বেড়ে চলেছিল। বিয়ের কয়েক দিন পরেই সরস্বতী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
তাঁর আত্মীয়দের অভিযোগ, সোমবার রাতে সরস্বতীর উপরে নৃশংস অত্যাচার করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁর চোখে রড দিয়ে আঘাত করা হয়, শিলনোড়া দিয়ে দাঁত ভেঙে দেওয়া হয়। তার পরে ওই তরুণীকে একটি ঘরে আটকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ।
ওই তরুণীর বাবা শৈলেন মাঝি এ নিয়ে তাঁর মেয়ের শ্বশুর, শাশুড়ি, স্বামী, ননদ সহ সাত জনের বিরুদ্ধে নানুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার রাতেই মেয়ের শ্বশুরবাড়ির আশপাশের লোকেদের ফোনে জানতে পারি মেয়ের উপরে অত্যাচার হয়েছে। গিয়ে দেখি মেয়ে বেঁচে নেই। যারা এমন করেছে তাদের চরম সাজা চাই।’’
মঙ্গলবার মোহনপুরে গিয়ে জানা যায়, ঘটনার পর থেকেই সরস্বতীর শ্বশুরবাড়ির কেউ সেখানে নেই। যে ঘরে ওই তরুণীকে আটকে আগুন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ, সেই ঘর লণ্ডভণ্ড। ঘরের বিভিন্ন জায়গায় আগুনে পোড়া দাগ। ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘গত রাতে আগুন লেগেছে বলে চিৎকার শুনতে পাই। বেরিয়ে দেখি ওই মেয়েটি দাউদাউ করে জ্বলছে।’’ এলাকাবাসীই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy