চতুর্থী থেকে সপ্তমী ব্রতপালন। ব্রত শেষের আগের দিন বিকেলে সূর্যকে অর্ঘ্য দিতে ও পরের দিন ভোরে সূর্যারতি করতে জলাশয়ে আসা বাধ্যতামূলক— ছট পুজোয় এটিই রীতি। সোমবার বিকেলে এবং মঙ্গলবার সকালে ছট উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন পুর শহরে এবং নদীতে যে জমায়েত হবে, সেখানে পুণ্যার্থীদের যে-কোনও রকম সমস্যা এড়াতে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকেই।
পে লোডার দিয়ে পুকুর বা জলাশয়ে ঘাট তৈরি, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, স্নান সেরে মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের ঘর, বিপদ ঘটলে কী করণীয় সব ব্যবস্থাই পাকা করা হচ্ছে নলহাটি থেকে দুবরাজপুর সর্বত্রই। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে রয়েছে পুলিশও। ছটের প্রস্তুতির তালিকায় রয়েছে মূলত জেলার সবক’টি পুরশহরই। এর বাইরে বড় আকারে ছট পালন হয় খয়রাশোলের অজয় নদের ভীমগড় ঘাটে। যদিও এ বছর এদিকে ছট পালন হবে কি না ধোঁয়াশা।
পশ্চিম বর্ধমানে থেকে বহু মানুষ প্রতি বছর ভীমগড় ঘাটে আসেন। সে কারণে সবচেয়ে বড় ব্যবস্থা এখানেই থাকে। তবে, এ বার অজয় নদ বিপজ্জনক ভাবে এ দিকে সরে আসায় ও অনেক জল থাকায় সম্ভবত নদের ভীমগড় ঘাটের দিকে ছট পালনের জন্য এ বারই প্রথম আসছেন না পুণ্যার্থীরা। পুলিশ ও স্থানীয় কেন্দ্রগড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে এমনই খবর।
বোলপুর পুরসভার তরফে জানা গিয়েছে, শহরের কোপাই-সহ বেশ কয়েকটি ঘাট পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকেই। এ ছাড়াও যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুরসভার তরফে প্রতিটি ঘাটে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বেচ্ছাসেবক মোতায়ন করা হবে। একই দাবি করেছেন রামপুরহাটের পুরপ্রধান সৌমেন ভকত। তিনি বলেন, “শহরের মোট ৫টি ঘাট পরিষ্কার করে আলোর লাগানো চলছে, মহিলাদের পোশাক পরিবর্তনের ঘেরাটোপ তৈরি হচ্ছে। সব থেকে বেশি ভিড় হয় গান্ধীপুকুরে। একটি করে ছটপুজো কমিটি গঠন করা হয়েছে। যান নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে পুলিশের সৌজন্য।”
দুবরাজপুরে নায়ক পুকুর, বাঁধা পুকুর, দুধ পুকুর এবং সাতকেন্দুরী এলাকার মোট চারটি পুকুরে ছট পালন হয়। শুক্রবার সেই পুকুরগুলির ঘাট পরিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে। অন্য দিকে, সিউড়ির সুভাষপল্লি পুকুর, হাটজন বাজারের পুকুর, বড় কালী বাড়ির পুকুরে ছট পালনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে জানিয়েছেন পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। হাটজনবাজারে পুকুরঘাটের আগাছা নির্মূল করে শ্যাওলা পরিষ্কার করা হয়েছে ছট কমিটির তরফে। নলহাটি শহরের পাঁচ-ছ’টি ঘাটেও একই ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়েছেন পুরপ্রধান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিংহ। সাঁইথিয়া শহরের ৫, ১২, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি পুকুরেও পুরসভার উদ্যোগে ছটের জন্য তৈরি করা হয়েছে। থাকছে নজরদারি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার, স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশ। শহরের তিনটি ঘাট ছাড়াও শহর ঘেঁষা ময়ূরাক্ষী নদীতে ছট পালনের জন্য ঘাট তৈরি হয়েছে জানাচ্ছেন পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)