Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

বার্ড-ফ্লু আতঙ্ক ছাড়া দাম এত নামেনি, বলছেন মাংস বিক্রেতারা

সিউড়ি শহরের মুরগির মাংস বিক্রেতাদের থেকে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০-৪০ টাকা কমেছে।

পড়তি: সিউড়ির একটি মাংসের দোকােন। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

পড়তি: সিউড়ির একটি মাংসের দোকােন। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

শুভদীপ পাল 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

ব্রয়লার মুরগি থেকেও নাকি ছড়াতে পারে করোনাভাইরাস। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এই গুজবের প্রভাব পড়ল জেলাতেও। বীরভূমের নানা প্রান্তের সঙ্গে জেলা সদর সিউড়িতেও কমেছে মুরগির মাংসের বিক্রি। পড়ে গিয়েছে দামও।

সিউড়ি শহরের মুরগির মাংস বিক্রেতাদের থেকে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগির দাম ৩০-৪০ টাকা কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে ক্রেতার সংখ্যাও। ফলে বিপাকে পড়েছেন মাংস বিক্রেতারা। তাঁদের দাবি, মাস দেড়েক আগেও মুরগি মাংস বিক্রি হয়েছে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে। এখন কমে হয়েছে প্রতি কেজিতে ১১০-১২০ টাকা। মাস দেড়েক আগে গোটা মুরগির দাম ছিল কেজি প্রতি ৮৫-৯০ টাকা। সেটাই এখন ৬৫-৭০ টাকা।

মাস দেড়েক আগেও কোনও বিক্রেতা যদি প্রতিদিন ৩০ কেজি মাংস বিক্রি করতেন, তা হলে এখন তাঁর বিক্রি কমে দাঁড়িয়েছে ১০-১৫ কেজিতে। অর্থাৎ, মাংসের বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ কমেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বড়সড় লোকসানের আশঙ্কা করছেন বিক্রেতারা।

সিউড়ির কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের পিছনে থাকা মাংস বিক্রেতা স্নেহাংশু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আগে কেজি প্রতি ১৬০ টাকা দরে মাংস বিক্রি করেছি। কিন্তু, এখন সেটা হয়েছে ১১০-১২০ টাকা কেজি। মানুষের মধ্যে আতঙ্কের কারণে মাংস বিক্রি কম হচ্ছে। চাহিদা কম থাকায় দামও পড়েছে।’’ সিউড়ির কোর্ট বাজারের মাংস বিক্রেতা শেখ দুলাল বলেন, ‘‘সব জায়গায় বলা হচ্ছে, ওই পোস্ট ভুয়ো। কিন্তু তার পরেও মানুষ ভয় পাচ্ছেন।’’ একই কথা বলেছেন দুবরাজপুরের মাংস বিক্রেতা মনোজ বাউরি। তাঁর কথায়, ‘‘১৩ বছর ধরে এই ব্যবসায় যুক্ত। কেবল বার্ড ফ্লুর সময়ে এ ভাবে মাংসের দাম নেমে গিয়েছিল।’’

বিক্রেতাদের দাবি, কেবল ব্রয়লার মুরগির ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। দিশি মুরগির ক্ষেত্রে এই গুজবের প্রভাব পড়েনি। কেবল বিক্রেতারা নন, ব্রয়লার মুরগির চাহিদা কমায় বিপাকে ফার্ম মালিকরাও। তাঁদের থেকে জানা গিয়েছে, বর্তমানে জেলার অধিকাংশ ফার্ম মালিকরা বড় বড় কোম্পানির ফ্র্যাঞ্চাইজির মাধ্যমে ব্যবসা করে থাকেন। ফলে সমস্যার প্রভাব প্রত্যক্ষ ভাবে না পড়লেও পরোক্ষ সমস্যা তাঁদেরও হচ্ছে। ফার্ম মালিকদের কথায়, দাম কমে যাওয়ায় কোম্পানি থেকে নতুন মুরগির ছানা সহজে দিতে চায় না। একই রকম ভাবে পালিত মুরগিগুলিকেও তাঁরা নিতে চান না। ফলে সমস্যা হয়।

তবে, গত কয়েক সপ্তাহে যে ভাবে দাম কমেছে, তাতে কোম্পানিগুলিরও লোকসান হচ্ছে। কারণ, একটি মুরগির ছানা পালন করে বড় করে তুলতে কেজি প্রতিতে প্রায় ৬০-৬২ টাকা খরচ হয়। সেখানে কোম্পানিগুলিকে এখন খুচরা বিক্রেতাদের কেজি প্রতি ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে বড় অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে।

এই নিয়ে ফার্ম মালিক সুমন্ত পাল বলেন, ‘‘আমাদের সরাসরি ক্ষতি হয়নি। তবে দাম বেশি থাকলে আমরা কিছু টাকা বোনাস পাই। সেটাও আর পাব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Chicken Bird Flu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE