Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তাল কাটল কিসান ক্রেডিট কার্ডে

মঙ্গলবার বৈঠকের শুরুতেই কিসান ক্রেডিট কার্ড নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা। বলেন, ‘‘কেসিসি নিয়ে খামতি রয়েছে পুরুলিয়ায়।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

একশো দিনের কাজ, উদ্যানপালন দফতরের আম চাষ— মুখ্যমন্ত্রী অনেক ব্যাপারেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রশাসনিক বৈঠকে। তালটা কিছুটা কেটেছে কিসান ক্রেডিট কার্ডের ব্যাপারে।

মঙ্গলবার বৈঠকের শুরুতেই কিসান ক্রেডিট কার্ড নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন মমতা। বলেন, ‘‘কেসিসি নিয়ে খামতি রয়েছে পুরুলিয়ায়।’’ কেন, সেই ব্যাখ্যা চান জেলাশাসক ও কৃষি দফতরের কাছে। কৃষি দফতরের কাজেও তিনি যে বিশেষ সন্তুষ্ট নন, জানিয়ে দেন সে কথাও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুরুলিয়াতে কৃষির কাজ অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে।’’ বিকল্প চাষ হিসাবে লাক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন।

পুরুলিয়ায় চাষিদের কিসান ক্রেডিট কার্ড সময় মতো দেওয়ার ব্যাপারে আগেও প্রশাসনিক বৈঠকে এসে জোর দিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন পুরুলিয়া শহরের বেলগুমা পুলিশ লাইনে বৈঠকে এসে সেই প্রসঙ্গ উঠতেই উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। প্রশাসনের কর্তাদের দেওয়া ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি। কাজে আরও গতি আনার নির্দেশ দেন।

আর সে ক্ষেত্রে পুরুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা না থাকা বড় সমস্যা বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরুলিয়ার ১৭০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮০টিতেই ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেই। প্রত্যন্ত এলাকায় মোবাইল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও সমবায় ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যাপারটি কী? প্রশাসনের এক কর্তা জানান, মোবাইল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা মানে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের দরজায় পৌঁছে যাবে। গাড়িতে থাকবে আধুনিক যন্ত্র। গ্রাহকেরা তাতে টাকা জমা করতে পারবেন। তুলতে পারবেন। পাস বই আপডেট করতে পারবেন।

এ দিনের বৈঠকে জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ঘাটতি মিটিয়ে তাঁরা কিসান ক্রে়ডিট কার্ড দেওয়ার কাজ করছেন। পরিসংখ্যান দেন— গত পাঁচ বছরে পুরুলিয়ায় ২ লক্ষ ১৯ হাজার কিসান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। শুধু গত এক বছরেই দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার। এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪ হাজার কার্ডের ফর্ম বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘চলতি মাসের মধ্যে ৭০ শতাংশ কার্ড কৃষকদের দিয়ে দেওয়া হবে।”

ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ঘাটতি আর চাষিদের মধ্যে সচেতনতা পুরোপুরি তৈরি না হওয়া— কিসান ক্রেডিট কার্ডের ব্যাপারে এই দু’টিই মূল সমস্যা বলে মানছে জেলা প্রশাসন ও কৃষি দফতর। এই কার্ড পেতে চাষিরা ফর্ম পূরণ করে ব্যাঙ্কে আবেদন করেন। তত্বাবধান করে কৃষি দফতর। আবেদন করার ব্যাপারে চাষিদের উৎসাহ দিতে গত এক বছরে গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচার করেছেন দফতরের কর্মীরা। মণ্ডপে শিবির করে পুজো দেখতে আসা চাষিদের দিয়ে ফর্ম পূরণ করানো হয়েছে।

বৈঠকে ছিলেন রঘুনাথপুরের বিধায়ক তথা পুরুলিয়া কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি। তাঁর কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, বিভিন্ন পঞ্চায়েতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সমস্যা মেটাতে সমবায় ব্যাঙ্ক কী করছে? বিধায়ক জানান, জেলায় নতুন একটি সমবায় ব্যাঙ্ক খোলা হয়েছে। আরও কুড়িটি খোলার প্রক্রিয়া চলছে। তবে নতুন ব্যাঙ্ক খোলার আগে ব্যাঙ্ক না থাকা বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় মোবাইল ব্যাঙ্কিং পরিষেবা শুরু করার নির্দেশ দেন মমতা। সেই নির্দেশ মতো দ্রুত পরিষেবাটি চালু করতে উদ্যোগী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পূর্ণচন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kisan Credit Card Problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE