Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
School Closed

বন্ধ হচ্ছে পাঠশালা, প্রতিবাদে মিছিল

সম্প্রতি বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চ পাঠশালা বন্ধের দাবিতে এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করে। তাতে যোগ দিয়েছিল পাঠশালার ছাত্রছাত্রীরাও।

An image of children studying

চলছে পাঠদান। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গঙ্গাজলঘাটি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৭:৫৫
Share: Save:

এক সময়ে মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক অফিসের বারান্দায় দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের জন্য অবৈতনিক ‘কোচিং সেন্টার’ খুলেছিলেন ওই কেন্দ্রে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত রতনকুমার ঘোষ। অবসর নেওয়ার পরেও পড়ানোর টানে মেজিয়ায় থেকে গিয়েছিলেন আদতে মালদহের বাসিন্দা রতন। তবে সম্প্রতি বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ওই বারান্দা-সহ অফিস ঘরটি অন্য কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিভতে চলছে সেই আলো। সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয় অভিভাবক থেকে পড়ুয়ারা। মালদহের বাড়ি ফিরতে চান অভিমানী রতনও।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় তেইশ বছর আগে শুরু হওয়া ওই কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন এলাকার প্রচুর দুঃস্থ ছাত্রছাত্রী। ‘সিটু’ পরিচালিত ‘অল ভ্যালি কর্মচারী ইউনিয়ন’-এর মেজিয়ার কার্যকরী সভাপতি সমীর বাইন বলেন, “এক সময়ে ডিভিসির ‘সিএসআর’ প্রজেক্ট থেকেই ওই অবৈতনিক পাঠশালার সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছিল। অবসরের পরেও রতন ঘোষকে থাকার জায়গা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে কর্তৃপক্ষ ওই কার্যালয় একটি বেসরকারি স্কুলকে ব্যবহার করতে দেবেন। বন্ধ হয়ে যাবে অবৈতনিক পাঠশালা। দুঃস্থ পড়ুয়াদের ক্ষতি হবে।”

‘আইএনটিইউসি’ পরিচালিত শ্রমিক সংগঠনের মেজিয়া ইউনিটের সভাপতি অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘ওই অবৈতনিক পাঠশালা আমাদের গর্ব। এখানে পড়েই এক পরিচারিকার মেয়ে শিক্ষিকা হয়েছেন। দিনমজুর বাবার ছেলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। আমাদের সহকর্মীরাই পড়ান। পাঠশালা বন্ধ হয়ে গেলে দুঃস্থ মানুষদের ছেলেমেয়েদের সমস্যা হবে। আমরা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি।”

সম্প্রতি বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চ পাঠশালা বন্ধের দাবিতে এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল করে। তাতে যোগ দিয়েছিল পাঠশালার ছাত্রছাত্রীরাও। এক অভিভাবক, ঠেলাচালক গোবিন্দ গরাঁই বলেন, “আমাদের টিউশন দেওয়ার পয়সা নেই। অবৈতনিক পাঠশালায় ছেলেমেয়েরা বিনাপয়সায় কোচিং পেত। তা বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে ওদের!” দিনমজুর নিমাই বাউরি, শক্তিপদ দাসেরাও পাঠশালা বন্ধ হওয়ায় চিন্তিত। রতন বলেন, “অনেক কষ্ট করে পাঠশালাটা গড়ে তুলেছিলাম। এখন তা বন্ধ হয়ে যাবে বলছে। পাঠশালা বাঁচাতে সবার কাছে আবেদন করছি। আর পাঠশালা বন্ধ হয়ে গেলে মালদহেই ফিরে যাব।” বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড প্রজেক্ট হেড সুশান্ত ষন্নিগ্রাহী তবে বলেন, “ওঁকে লিখিত ভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এখন ওই কার্যালয় অন্য কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Closed Education system
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE