E-Paper

জল কোথায়, খুঁজছে খড়্গপুর আইআইটি

সম্প্রতি জলের সমস্যার কথা খড়্গপুর আইআইটি’কে জানায় পুরসভা। তার পরেই, শহরে আসেন প্রতিষ্ঠানের ‘স্কুল অব ওয়াটার রিসোর্স বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পার্থসারথি ঘোষাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ০৮:৪৬
জলেই স্বস্তি ইঁদপুরে। নিজস্ব চিত্র

জলেই স্বস্তি ইঁদপুরে। নিজস্ব চিত্র

শহরে পানীয় জলের জোগান বাড়ানোর উপায় খুঁজতে খড়্গপুর আইআইটি’র সহায়তা নিচ্ছে পুরুলিয়া পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই আইআইটি’র ‘স্কুল অব ওয়াটার রিসোর্স’ বিভাগের এক অধ্যাপক শহরে ঘুরে নানা তথ্য সংগ্রহ করেছেন।

পুরপ্রধান, তৃণমূলের নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘শহরে পানীয় জলের প্রধান উৎস কংসাবতী নদী। গ্রীষ্ম আসার আগেই নদী শুকিয়ে যায়। এই সময় ভরসা বালির স্তরে সঞ্চিত জল। সেই জল নদীর কয়েকটি জায়গা থেকে তোলা হয়। কিন্তু এ বার অবস্থা খুবই খারাপ। জলস্তর একেবারেই তলানিতে চলে গিয়েছে। নদীর তলা থেকে নামমাত্র পরিমাণ জল মিলছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে, ‘মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেট’-এর বিশেষজ্ঞেরা নদীর বুকে ‘ইনফিল্টেশন গ্যালারি’ (নদীবক্ষে বালির নীচে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে বালির স্তরের জল আটকে রাখা) তৈরি করে জলের জোগান কিছুটা বাড়াতে পেরেছিলেন। কিন্তু চাহিদা বাড়তে থাকায় টান পড়ছে জলের সেই ভান্ডারেও। তাই নিয়মিত সরবরাহ করতে পারছি না। সে কারণে জলের নতুন উৎস খোঁজা প্রয়োজন।’’

সম্প্রতি জলের সমস্যার কথা খড়্গপুর আইআইটি’কে জানায় পুরসভা। তার পরেই, শহরে আসেন প্রতিষ্ঠানের ‘স্কুল অব ওয়াটার রিসোর্স বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পার্থসারথি ঘোষাল। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে তিনি কংসাবতী নদীর যে ঘাটগুলি থেকে শহরে জল সরবরাহ হয়, সেগুলি ঘুরে দেখেন। নদীর পরিসর, বালির স্তর, এখন কত জল মিলছে, নদী কত দিন শুকনো থাকে, জেলায় বছরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ— এই সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেন তিনি।

পুরপ্রধান বলেন, ‘‘এই নদী থেকেই আমাদের জলের নতুন উৎসের সন্ধান করতে হবে। আইআইটি’র ওই বিশেষজ্ঞ নদীর ঘাটগুলি ঘুরে দেখেছেন। বিভিন্ন তথ্যও সংগ্রহ করেছেন। তিনি আবার আসবেন। নতুন উৎসের খোঁজ দিতে বা জলের সরবরাহ বাড়াতে সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) দেবেন। সেই রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাব। তেলেডি ঘাটে ইনফিল্টেশন গ্যালারি রয়েছে। প্রয়োজনে শিমূলিয়া ঘাটের কিছুটা নীচের দিকে আর একটি ইনফিল্টেশন গ্যালারি করা যেতে পারে।’’

২০১১ জনগণনা অনুযায়ী শহরের জনসংখ্যা এক লক্ষ ১১ হাজার। পুরসভা সূত্রে খবর, এখন তা বেড়ে হয়েছে দেড় লক্ষেরও বেশি। তার সঙ্গে রয়েছে বাইরে থেকে আসা মানুষের চাপ। শহরবাসীর চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন অন্তত ২৪ মিলিয়ন লিটার জল প্রয়োজন। এখন মিলছে মেরেকেটে সাত মিলিয়ন লিটার। গ্রীষ্মকাল আসার ঠিক আগে থেকে পরের তিন মাস সময়কে পুরুলিয়ার জলকষ্টের সময় বলে ধরা হয়। পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এই সময়ে কত জল মিলবে, তা নির্ভর করবে নদীবক্ষে বালির স্তর কতটা রয়েছে, তার উপরে।

পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু বলেন, ‘‘অতীতে নদীবক্ষ থেকে নির্বিচারে বালি তোলার ক্ষতি কবে পূরণ হবে, তা বলা যাবে না। তবে তেলেডি ঘাটের উপরের দিক থেকে ডাবর-বলরামপুর ঘাটের নিচু এলাকা পর্যন্ত, যেখানে তিনটি ঘাট থেকে শহরে পানীয় জল আসে, সেখানে আর কোনও ভাবেই বালি তুলতে দেওয়া যাবে না। পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে। শুধু গ্রীষ্ম নয়, সারা বছর বালি তোলা বন্ধ করতে হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Purulia Municipality IIT Kharagpur

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy