Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
সিদ্ধান্ত জেলা পরিষদে

দু’লক্ষ টাকার কাজেও এ বার থেকে ই-টেন্ডার

এখন থেকে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে দু’লক্ষ টাকা বা তার বেশি টাকার অঙ্কের কাজের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার করা হবে। সোমবার পরিষদের অর্থ সমিতির বৈঠকে বিস্তর বাদানুবাদের পর, এমনই সিদ্ধান্ত নিল সমিতি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘কাজের প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ কেউ আপত্তি তুলেছেন, তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এবার থেকে দু’ লক্ষ টাকার বা তার বেশি টাকার কাজ ই-টেন্ডারের মাধ্যমেই করা হবে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০০:০৩
Share: Save:

এখন থেকে পুরুলিয়া জেলা পরিষদে দু’লক্ষ টাকা বা তার বেশি টাকার অঙ্কের কাজের ক্ষেত্রে ই-টেন্ডার করা হবে। সোমবার পরিষদের অর্থ সমিতির বৈঠকে বিস্তর বাদানুবাদের পর, এমনই সিদ্ধান্ত নিল সমিতি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতো বলেন, ‘‘কাজের প্রক্রিয়া নিয়ে কেউ কেউ আপত্তি তুলেছেন, তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এবার থেকে দু’ লক্ষ টাকার বা তার বেশি টাকার কাজ ই-টেন্ডারের মাধ্যমেই করা হবে।’’

জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত সোমবার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলায় উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠকে। সেদিন জেলা পরিষদের বেশ কয়েকজন সদস্য ও কর্মাধ্যক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে তাঁরা দাবি করেন, সভাধিপতি বেশ কিছু কাজের ক্ষেত্রে সদস্য ও কর্মাধ্যক্ষদের অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সদস্যদের একাংশের সঙ্গে তাঁর অগণতান্ত্রিক আচরণেরও অভিযোগ ছিল চিঠিতে। এ দিন সমিতির বৈঠক শুরুর পর সেই চিঠির প্রসঙ্গ তোলেন পূর্ত বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ তথা জেলা পরিষদে তৃণমূলের দলনেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সদস্যদের কাছে জানতে চান, মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠির দুর্নীতির বিষয়ে। বলেন, আপনারা দেখান কোন কাজে দুর্নীতি হয়েছে? বৈঠকের মাঝেই জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায় এর জবাব দেন। তিনি বলেন, ‘‘যে এলাকায় কাজ হচ্ছে জেলা পরিষদের সেই এলাকার সদস্য সেই কাজ সম্পর্কে অন্ধকারে থাকেন। এরকম একাধিক নজির রয়েছে।’’ এমন অভিযোগও ওঠে, পাশাপাশি কাজের এলাকা বিচার করার ক্ষেত্রেও নিজের পরিচিত লোকজনকে কিছু ক্ষেত্রে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

ঘটনা হল, পাঁচ লক্ষ টাকার কাজ এত দিন ই-টেন্ডার না করে স্থানীয় টেন্ডারের মাধ্যমে করানো হত। দাবি ওঠে, এ বার থেকে দু’ লক্ষ টাকার বেশি অঙ্কের টাকার কাজ হলে ই-টেন্ডার করতে হবে। এই দাবি নিয়েই বাদানুবাদ শুরু হয়। সভাধিপতি এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ, দু’জনেই যুক্তি দেখান যে স্থানীয় যুবকেরা যাতে কাজ পান এবং তাঁদের যাতে কাজের অভিজ্ঞতা তৈরি হতে পারে সে কারণেই পাঁচ লক্ষ টাকার কাজ স্থানীয় ভাবে টেন্ডারের মাধ্যমে করা হয়। কিন্তু ই-টেন্ডার করে কাজ করলে স্থানীয়রা কাজ করার সুযোগ হারাতে পারেন।

সমিতির বৈঠকে কয়েক জন সদস্য ই-টেন্ডারের বিষয়টি নিয়ে অনড় থাকলে ভোটাভুটির প্রস্তাব ওঠে। সভাধিপতি নিজেই এই প্রস্তাব দেন। কিন্তু ভোটাভুটি হলে একটা বিভাজন তৈরি হতে পারে এই যুক্তিতে সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। শেষে সিদ্ধান্ত হয়, যে দু’ লক্ষ টাকার বা তার বেশি টাকার অঙ্কের কাজ এবার থেকে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই করা হবে। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘আমি জানতে চেয়েছিলাম চিঠির বিষয়ে। কেন না আমার মনে হয়েছিল দলনেতা হিসেবে আমার কাছে সমস্ত বিষয়টি স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। তাই আমি জানতে চাই যে কোথায় দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এর কোনও পরিষ্কার বাখ্যা মেলেনি। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এবার থেকে জেলা পরিষদের দু’ লক্ষ টাকার বা তার বেশি কাজ ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হবে।’’ উত্তমবাবু বলেন, ‘‘এ দিন বৈঠক ছিল। কিছু সদস্য টেন্ডারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে তাঁদের আপত্তির কথা বলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE