Advertisement
E-Paper

বর্ষার আগেই খুলল রবীন্দ্রসেতু

এক দশকেরও বেশি সময় অকেজো হয়ে পড়েছিল সেতু। বহু অপেক্ষার পরে চলতি মাসের ১১ তারিখ খুলে দেওয়া হয়েছে তা। বর্ষার আগেই ওই সেতু সংস্কার করে খুলে দেওয়ায় হাসি ফুটেছে নিত্যযাত্রী থেকে বোলপুর, লাভপুর, সাঁইথিয়া ব্লকের অন্তর্গত ৫০টিরও বেশি গ্রামের মানুষের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৬:৫২
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। শান্তিনিকেতনে আদিত্যপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। শান্তিনিকেতনে আদিত্যপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।

এক দশকেরও বেশি সময় অকেজো হয়ে পড়েছিল সেতু। বহু অপেক্ষার পরে চলতি মাসের ১১ তারিখ খুলে দেওয়া হয়েছে তা। বর্ষার আগেই ওই সেতু সংস্কার করে খুলে দেওয়ায় হাসি ফুটেছে নিত্যযাত্রী থেকে বোলপুর, লাভপুর, সাঁইথিয়া ব্লকের অন্তর্গত ৫০টিরও বেশি গ্রামের মানুষের।

চলতি মাসের ১১ তারিখ আনুষ্ঠানিক ভাবে খুলে দেওয়া হয় কোপাই নদীর উপরে আদিত্যপুরের কাছে রবীন্দ্র সেতু। সে তথ্য জানিয়ে বীরভূমের অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) নিবিল ইশ্বরারী বলেন, “১৫২.১৬ মিটার লম্বা ও ৮.৪০ মিটার চওড়া এই সেতুর জন্য ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। বীরভূমে এত বড় সেতু জেলা পরিষদের উদ্যোগে দ্বিতীয়।’’ এর আগে মল্লারপুরে একই রকম সেতু তৈরি করা হয়েছে।

বোলপুর-সহ লাগোয়া লাভপুর এবং সাঁইথিয়া ব্লকের বহু গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের নিত্য ভোগান্তি ছিল ওই সেতুকে ঘিরে। সেতুতে চলাচল বন্ধ থাকায় কম করেও প্রায় দশ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পারাপার করতে বাধ্য হতেন সেই সব মানুষজন। ভরা গ্রীষ্মে কোনও মতে পারাপার হলেও, অন্য মরসুমে কখনও কোমর, আবার কখনও হাঁটু জলে পারাপার করতে হত। অবশেষে দুর্দশা ঘুচেছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক দশকেরও কিছু বেশি সময় ওই সেতু ভাঙা পড়েছিল। বাম আমলে, ২০০৯ সালে প্রাথমিক ভাবে সংস্কারে উদ্যোগী হলেও, নানা কারণে কাজ বেশি দূর এগোয়নি।

রাজ্যে পালাবদলের পরে স্থানীয় বাসিন্দারা একাধিক পঞ্চায়েতের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিষয়টি বীরভূম জেলা পরিষদের নজরে আনেন। বোলপুর ব্লকের কঙ্কালিতলা পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান মহম্মদ অহিদউদ্দিন এবং সর্পলেহনা-আলবাঁধা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দীননাথ ভট্টাচার্য জানান, বর্যাকালে সেতুর এ পারের একাধিক গ্রাম এবং ও পারের একাধিক গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। এমনকী অন্য মরসুমেও পারাপার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হত বাসিন্দাদের। এই পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে নিয়ে সেতুর প্রয়োজনীয়তা বোঝানো হয় বীরভূম জেলা পরিষদের কর্তাদের। তারপরেই কাজ হয়।

পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, বোলপুর ব্লকের দুই পঞ্চায়েত কঙ্কালিতলা এবং সর্পলেহনা-আলবাঁধার তিরিশেরও বেশি গ্রামের বাসিন্দারা সরাসরি এই সেতুর উপরে নির্ভরশীল। ওই সেতু দিয়েই যাতায়াত সাঁইথিয়া এবং লাভপুর ব্লকের একাধিক গ্রামের মানুষদের। সেতুর প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে উদ্যোগী হয় জেলা পরিষদ। সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “২০১১ সালে জেলা পরিষদে ক্ষমতায় আসার পর বোলপুর, লাভপুর এবং সাঁইথিয়া ব্লকের বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে আমরা সেতু সংস্কারে এগোই। চলতি মাসের ১১ তারিখে ওই রবীন্দ্র সেতু স্থানীয়দের জন্য খুলে দেওয়া হয়।”

জেলা পরিষদের এমন উদ্যোগে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি স্থানীয়রা। রবীন্দ্রসেতুর এপারে অর্থাৎ বোলপুরের দিকে কঙ্কালিতলা পঞ্চায়েতের বিরকিচা, বনডাঙ্গা, দেবানন্দপুর, আদিত্যপুর, পারুলডাঙা, দোনাইপুর, কঙ্কালিতলা, আমডহরার বাসিন্দারাও খুশি। সেই রেশ পৌঁছেছে অন্য পারেও। সর্পলেহণা-আলবাঁধার সর্বানন্দপুর, কলহরপুর, আলবাঁধা, দর্পশিলা, শীতলপুর, গোপিনাথপুর এলাকার বাসিন্দারাও এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। ‘‘খুব উপকার হল’’— বলছেন আদিত্যপুরের সাগর দাস, পারুলডাঙার পঞ্চায়েত সদস্য সুজিত লোহার, দোনাইপুরের উৎপল মণ্ডল, কঙ্কালিতলার কাকলি টুডু, আমডহরার জবা হেমব্রমরা।

সেতুর উদ্বোধন করে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ জানান, রামপুরহাট দুই নম্বর পঞ্চায়েতের ভাংড়া এলাকাতেও আনুমানিক ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু করার চেষ্টা চলছে।

Rabindrasetu reopened Bolpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy