Advertisement
১১ মে ২০২৪

ফোঁটা দিয়ে শহিদ-স্মরণ পুরুলিয়ায়

উরিতে নিহত ভারতীয় জওয়ানদের ছবিতে মেয়েগুলো ফোঁটা দিচ্ছিল। ফ্যাল ফ্যাল করে আরও অনেকের সঙ্গেই সে দিকেই তাকিয়ে ছিল বছর সতেরোর কিশোর বুধু বাউরি।

উরির শহিদদের স্মরণ। — নিজস্ব চিত্র

উরির শহিদদের স্মরণ। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৫৩
Share: Save:

উরিতে নিহত ভারতীয় জওয়ানদের ছবিতে মেয়েগুলো ফোঁটা দিচ্ছিল। ফ্যাল ফ্যাল করে আরও অনেকের সঙ্গেই সে দিকেই তাকিয়ে ছিল বছর সতেরোর কিশোর বুধু বাউরি। এক মুখ হাসি নিয়ে ফোঁটা নিতে আসা চা দোকানের ওই কর্মীর চোখ কখন যেন জলে ভরে উঠেছিল।

মঙ্গলবার সকালে পুরুলিয়ার মানভূম স্পোটর্স অ্যাসোসিয়েশনের ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সম্প্রীতির ভাইফোঁটায় এসে বুধুর মতোই অনেকে মনমরা হয়ে পড়েন। যারা ফোঁটা দিচ্ছিল সেই মেয়েরাও বলে, ‘‘ওঁরা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তাঁরা আমাদের সবার দাদা-ভাই। তাঁদের আত্মার শান্তি কামনায় ফোঁটা দিলাম।’’ শহিদদের ছবিতে ফোঁটা দেওয়ার পরে কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করা হয়।

গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দোকানের শ্রমিক, পথশিশু-সহ সমাজের নানাস্তরের মানুষজনের নিয়ে সম্প্রীতির এই ভাইফোঁটার আয়োজন করে আসছে পুরুলিয়ার আমরা কজন নামে একটি সংস্থা। এই উদ্যোগের অন্যতম উদ্যোক্তা প্রলয় দাশগুপ্তর কথায়, ‘‘যাঁদের ফোঁটা দেওয়ার কেউ নেই, আবার থাকলেও অনেক দূরে কোথাও থাকেন, তাঁদের সবার জন্যই এখানে ভাইফোঁটার আয়োজন করা হয়। এ বার আমরা উরিতে নিহত জওয়ানদের সম্মান জানাতে আগে ফোঁটা দিয়েছি।’’

ফোঁটা দিতে এসেছিলেন অক্টোবরে হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত ন্যাশন্যাল স্কুল তাই-কোন-ডো চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জজয়ী নবম শ্রেণির ছাত্রী অগ্নিদীপ্তা চক্রবর্তী। তার কথায়, ‘‘আমার ভাইয়েরা এবারে আসতে পারেনি। তাই এখানে এসে ভাইদের ফোঁটা দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে। কতজনের আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা পেলাম।’’ তবে পুণ্যাশা গোস্বামী ও রিয়া ঘোষের মতো অনেকেই ফি বছর এখানে ফোঁটা দিতে আসে।

প্রতিবার আসে বুধুর মতো অনেকেই। ফোঁটা নেওয়ার পরে বুধুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ফোঁটা নেব বলে সকালেই স্নান সেরে চলে এসেছিলাম। এই দিনটার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি।’’ আবার পুরুলিয়া শহরেরই বাসিন্দা অ্যালভিন ল্যাম্বো বা আক্রামউদ্দিন খানের কথায়, ‘‘এখানে ফোঁটার দিনে উপস্থিত থাকলে শুধু ভাল লাগে তাই নয়, সকলকে বড় আপন মনে হয়।’’

এই উদ্যোগে সহায়তা করেছে মানভূম ক্রীড়া সংস্থা ও টাউন ক্লাব। ক্রীড়া সংস্থার পক্ষে দোলন ঘোষ জানান, এটা অন্য ধারার একটা আয়োজন। টাউন ক্লাবের প্রতিনিধি জয়ন্ত চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘বিভিন্ন চায়ের দোকানে যাঁরা কাজ করে, সারাদিন সেলুনে চুল-দাড়ি কাটে, কেউ বা দিনমজুরি করে এই আসরে তাঁরাই মধ্যমণি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bhaiphonta martyrs
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE