Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Nalhati

পাথর কিনে রাস্তার সংস্কারে বাসিন্দারাই

নলহাটি থানার ভদ্রপুর ১ পঞ্চায়েতের রায়পুর গ্রাম থেকে সাতটি এলাকা হামিদপুর, কুন্দপাড়া, প্রসাদপুর, বারণীঘাটা, কল্যাণপুর, মির্জাপুর গ্রামের মানুষজনকে বেহাল রাস্তা দিয়ে নিত্যদিন যাতায়াত করতে হয়।

চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র

চলছে কাজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নলহাটি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ ০৩:৩৬
Share: Save:

প্রশাসনের নানা স্তরে বহু বলেও কাজ না-হওয়ায় রাস্তা সংস্কার করতে নেমে পড়লেন গ্রামের বাসিন্দারাই। একশো দিনের কাজ করেন এমন কিছু বাসিন্দা এক দিনের মজুরি দিয়ে পাথর কিনে নিজেরাই তা দিয়ে রাস্তা মেরামত করছেন। তা কানে গিয়েছে প্রশাসনের। আবার সেই রাস্তার সংস্কারের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

নলহাটি থানার ভদ্রপুর ১ পঞ্চায়েতের রায়পুর গ্রাম থেকে সাতটি এলাকা হামিদপুর, কুন্দপাড়া, প্রসাদপুর, বারণীঘাটা, কল্যাণপুর, মির্জাপুর গ্রামের মানুষজনকে বেহাল রাস্তা দিয়ে নিত্যদিন যাতায়াত করতে হয়। ওই পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় ১৫ বছর আগে মোরাম, পাথর পড়েছিল। তার পরে বহু দিন হল রাস্তা বেহাল। অবস্থা এমন হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। রোগীদের সাইকেলে অথবা খাটিয়ায় করে নিয়ে যেতে হয়। এই অবস্থা দেখে সবচেয়ে খারাপ ৫০০ মিটার অংশে শুরু হয়েছে মেরামতি।

রবিবার সকালে গিয়ে দেখা গেল, চল্লিশ জন পাথর ঝুড়িতে করে মাথায় নিয়ে গর্ত ও কাদা হয়ে যাওয়া জায়গায় ফেলে রাস্তাটিকে চলাচলের উপযোগী করে তুলছেন। গ্রামবাসীর থেকে জানা গেল, ব্রাহ্মণী নদীর ধারের এই রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও রাস্তা নতুন করে বা মেরামতির কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি নলহাটি ২ ব্লক কিংবা পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি। বাধ্য হয়ে ওই পথেই যাতায়াত করেন স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, বৃদ্ধ মানুষ জন ও রোগীরা। বৃষ্টির সময় মোটরবাইক ও সাইকেলে যাতায়াত করা যায় না। হেঁটে যেতে হয়।

কানুপুর গ্রামের নিমাই মণ্ডল, নব মণ্ডল, রবীন্দ্রনাথ লেটরা বলেন, ‘‘রাস্তায় নিত্যদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। ছোটগাড়ি বা টোটো, অটো কোনও কিছুই গ্রামে ঢোকে না। রায়পুর পর্যন্ত গাড়িতে আসা যায়। তার পরের পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা হয়নি।’’ তাঁদের কথায়, ‘‘রায়পুর গ্রামের কিছু বাসিন্দা রাস্তা মেরামত করে দেওয়ায় লজ্জা হচ্ছে। আমাদের গ্রামের মানুষজন যদি যোগ দিতেন তা হলে আমাদের আর প্রশাসনের উপরে ভরসা করতে হত না।’’

ভদ্রপুর ১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘রাস্তা সংস্কারের জন্য জেলায় আবেদন করা হয়েছে। পঞ্চায়েতের তহবিলে রাস্তা নির্মাণের অর্থ নেই। গ্রামের মানুষজন বৈঠক করে ১০০ দিনের কাজ থেকে এক দিনের মজুরি দিয়ে রাস্তা মেরামত করছেন। এই উদ্যোগ দেখে আমিও পাশে দাঁড়িয়েছি।’’ বিডিও (নলহাটি ২) হুমায়ুন চৌধুরী বলেন, ‘‘সাতটি গ্রামের মানুষ জন আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, যে তাঁরা বাংলা আবাস যোজনার ঘর তৈরির ইমারতি সামগ্রী নিয়ে যেতে পারছেন না। আমি পঞ্চায়েতকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছিলাম। তা ছাড়া নতুন রাস্তার জন্য আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত অর্থ বরাদ্দ হয়ে গেলে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nalhati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE