সাহাপুর ঘুরে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যাবে, শেখ এনামুলকে নিয়ে তাঁদের ক্ষোভ ও অসন্তোষ ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বছর পাঁচেক ধরে সাহাপুর অঞ্চল সভাপতি পদে রয়েছেন ওই নেতা। এই সময়ের মধ্যেই সরকারি প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের পাশাপাশি দলবল নিয়ে এলাকায় ‘ভয়’-এর পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। বুধবার সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এনামুলকে পদ থেকে সরানোর দাবিও উঠেছিল এলাকায়। লোকসভা নির্বাচনের পরে পরেই সমস্যা মেটানোর একটা বিফল চেষ্টা হয়েছিল। স্থানীয় একটি ক্লাবকেও এনামুল হাতে করে নিয়েছিলেন বলে গ্রামবাসীদের দাবি। বুধবার পুলিশের তল্লাশিতে ওই ক্লাবের পিছনের বাগান থেকেও বেশ কিছু বোমা উদ্ধার হয়েছে। ওই জায়গায় সদ্য কাটা গর্ত দেখে পুলিশের অনুমান, এ দিন বোমাবাজির সময় ওই মজুত ভাণ্ডার থেকেও যে বোমা নেওয়া হয়েছিল।
সদাইপুর থানা এলাকায় থাকা সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৬টি সংসদ রয়েছে। তার মধ্যে শুধু সাহাপুর গ্রামে পাঁচটি সংসদ। ভোটার সাড়ে চার হাজার। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা কিংবা ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পে এলাকার বাসিন্দার প্রাপ্য সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়েও টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই নেতা। উন্নয়নের নামে ‘নিজের উন্নয়ন’ এত বেশি করেছেন যে, একদা আনাজ ব্যবসায়ী এনামুল এখন কোটিপতি। গ্রামবাসীদের আরও দাবি, সাহাপুর গ্রামে নিজেদের আদি বাড়ি ছাড়াও এনামুল দু’টি প্রাসাদোপম বাড়ি করে দিয়েছেন ছেলেদের নামে। অঞ্চল সভাপতি হওয়ার পর থেকেই তাঁর ও তাঁর চার ছেলের দাদাগিরি বহুগুণ বেড়ে গিয়েছিল। একাধিক গ্রামবাসী বলছেন, ‘‘আগে ভয়ে প্রতিবাদ করার উপায় ছিল না। এ বার পরিস্থিতি অন্য রকম। তাই প্রতিবাদ হল।’’