সনাতন গোস্বামী।
গোলমালের আঁচ পেয়েই ঝাড়খণ্ডে গা ঢাকা দিয়েছে পুরুলিয়ায় শিশু নির্যাতনে অভিযুক্ত সনাতন গোস্বামী (ঠাকুর)। পেশায় প্রাক্তন হোমগার্ড সনাতন পুলিশের তল্লাশি-পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকটাই ওয়াকিবহাল। সে জন্য ঝাড়খণ্ডে বার বার ঠিকানা বদলে সে তাঁদের চোখে ধুলো দিতে চাইছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীদের একাংশ। বুধবার রাত পর্যন্ত সনাতনের সন্ধান মেলেনি।
পুরুলিয়া মফস্সল থানার নদিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা বছর বাষট্টির সনাতনের বিরুদ্ধে বাড়ির পরিচারিকার সাড়ে তিন বছরের মেয়ের উপরে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর থেকে সে বেপাত্তা। কাছেই ঝাড়খণ্ড। সেখানে সনাতনের এমন অনেক আত্মীয় থাকেন, যাঁদের বাড়িতে সে হামেশা যেত। সেই আত্মীয়দের নামের তালিকা তৈরি করে ঝাড়খণ্ডে তল্লাশি শুরু করেছে পুরুলিয়া পুলিশের একটি দল।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলার সিরকা গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে খোঁজ করতে গিয়ে তারা জেনেছে, দিন তিনেক আগে সনাতন সেখানে গিয়েছিল। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওর (সনাতন) ধারণা আছে, পুলিশ কী ভাবে তদন্ত করে। মনে হচ্ছে, সে জন্যই সিরকা গ্রাম থেকে ও দ্রুত অন্যত্র সরে গিয়েছে।’’
পুলিশের অনুমান, আত্মীয়েরা এত দিনে জেনে গিয়েছেন, সনাতন কোন মামলায় অভিযুক্ত। ফলে, অনেকেই সনাতনকে আশ্রয় দিতে চাইবেন না। তাতে পুলিশের সুবিধে হতে পারে। তা ছা়ড়া, কীর্তনীয়া হিসেবে পরিচিত সনাতনের হদিস পেতে পুলিশ পুরুলিয়া এবং ঝাড়খণ্ডের কীর্তনের দলগুলির সঙ্গেও
যোগাযোগ করছে।
তবে এই মামলায় জেলা পুলিশের দেওয়া ধারা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের। কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী বুধবার বলেন, ‘‘শিশুটিকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ হয়েছে। তবে ‘পকসো’ (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনের যে ধারায় মামলা করা হয়েছে, তা তুলনায় লঘু। কমিশন অন্য ধারায় মামলা করার সুপারিশ করেছে।’’ পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘কমিশনের চিঠি এখনও পাইনি।’’
যে শিশুকে নিয়ে এত কাণ্ড সেই মেয়েটি এ দিন কিছুটা ভাল রয়েছে বলে এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় শিশুটিকে ‘অ্যান্টিবায়োটিক’ দেওয়া হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ‘নেবুলাইজ’ও করানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy