Advertisement
E-Paper

অষ্টম শ্রেণির পরেই কি পড়ায় ইতি, ধন্দ

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুজিতকুমার সামন্তের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘লহাটের স্কুলটিতে বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫০
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মাস চারেক পরেই শেষ হয়ে যাবে চলতি শিক্ষাবর্ষ। তার পরে কী হবে? দোলাচলে সাঁওতালি মাধ্যমে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর অনুমতি থাকা পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের লহাট জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকেরা। জেলার সাতটি স্কুলে সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি হরফে পড়ানোর বন্দোবস্ত থাকলেও ছ’টি স্কুলে সপ্তম শ্রেণির বেশি পড়ানোর অনুমোদন নেই। জেলার মধ্যে শুধুমাত্র লহাট জুনিয়র হাইস্কুলেই অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা সাঁওতালি মাধ্যমে পড়তে পারবে কি না, এই আশঙ্কা ঘনিয়েছে। পাশে দাঁড়িয়েছে সাঁওতালিদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করা কিছু সংগঠনও।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুজিতকুমার সামন্তের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘লহাটের স্কুলটিতে বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন হয়। আগামী বছর স্কুলটিকে যাতে মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা যায়, তা আমাদের বিবেচনার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক নিয়ে। কারণ, অতিথি শিক্ষক দিয়ে ওই স্কুলটি চলে। কী ভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়, দেখা হচ্ছে।’’

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সাঁওতাল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক শত্রুঘ্ন মুর্মু বলেন, ‘‘মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষালাভের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে বর্তমান সরকার ২০১৬ সালে কাশীপুরের কালীদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের লহাট জুনিয়র হাইস্কুলে সাঁওতালি ভাষায় পঠনপাঠনের অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু ওই স্কুলের সাঁওতালি মাধ্যমের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা কয়েক মাস পরে পাশ করে কোথায় পড়বে? উত্তর জানা নেই।’’

সাঁওতালি ভাষার এই শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, পঞ্চম শ্রেণি থেকে ওই স্কুলে পঠনপাঠন চলছে। অষ্টম শ্রেণিতে রয়েছে ৫১ জন পড়ুয়া। জেলার বাকি ছ’টি স্কুল থেকে সপ্তম শ্রেণি উত্তীর্ণ করার পরে পড়ুয়ারা লহাটের স্কুলে আসছে। ডিসেম্বর মাসে ওই পড়ুয়ারা বার্ষিক পরীক্ষা দেবে। কিন্তু তার পরের পথ অজানা।

শত্রুঘ্নবাবুর দাবি, পাশের জেলা বাঁকুড়ায় ১৪টি সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুল রয়েছে। সেখানে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত সাঁওতালিতে পড়ানো হয়। কিন্তু পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না কেন জানতে চেয়ে ইতিমধ্যে তাঁরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। জানানো হয়েছে শিক্ষা দফতরেও। কিন্তু জবাব আসেনি।

পরশি হাঁসদা, পূর্ণিমা কিস্কু, সরলা মুর্মু প্রমুখ পড়ুয়ার প্রশ্ন, ‘‘অষ্টম শ্রেণির পরে কি আর পড়তে পারব না?’’ শুভনাথ হাঁসদা, গোপীনাথ মুর্মু, বুধন কিস্কু-সহ অভিভাবকদেরও প্রশ্ন, ‘‘এর পরে ছেলেমেয়েদের কোথায় পড়াব?’’

প্রশাসন এ বার তাঁদের দাবি উপেক্ষা করলে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আদিবাসীদের সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। ওই সংগঠনের মুখপাত্র রতনলাল হাঁসদা দাবি করেন, ‘‘লহাটের স্কুলটিতে এক জন মাত্র অতিথি শিক্ষক রয়েছেন। বাকি পাঁচ জন স্বেচ্ছাসেবক। একই অবস্থা জেলার অন্য সাঁওতালি মাধ্যম স্কুলগুলিরও। মাতৃভাষায় পড়াশোনার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে জোড়াতালি ভাবে চলছে।’’ স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করা-সহ সুষ্ঠু পঠনপাঠনের পরিকাঠামো গড়ে তোলার মতো নানা দাবিতে তাঁরা ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রশাসন কী পদক্ষেপ করছে জানানো হচ্ছে না।

Santali Language
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy