Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Purulia

শহরে আলাদা অফিস ‘দাদার অনুগামী’দের

নেতাদের অনেকেই দাবি করেছেন, তৃণমূলে তাঁদের কথা বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতে আলাদা অফিসের দরকার হয়ে পড়েছিল

পুরুলিয়া শহরের সরকারপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র।

পুরুলিয়া শহরের সরকারপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৯
Share: Save:

শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ‘দাদার অনুগামী’ লেখা পোস্টার ও হোর্ডিং দেখা গিয়েছিল। রবিবার পুরুলিয়া শহরে ‘দাদার অনুগামী’দের অফিস খুলল। ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারপাড়ার ওই অফিসে এ দিন দেখা গিয়েছে জেলার বিভিন্ন ব্লক এবং শহরের কিছু পরিচিত তৃণমূল নেতাকে। বাইরে টাঙানো ফ্লেক্সে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দিয়ে লেখা, ‘লড়াইয়ের মাঠে দেখা হবে’। ওই নেতাদের দাবি, ‘দাদার অনুগামী’দের আলাদা অফিস রাজ্যে এই প্রথম। তবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

কয়েক মাস আগেই গেরুয়া পাগড়ি মাথায় শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেওয়া বিজয়া সম্মিলনীর হোর্ডিং দেখা গিয়েছিল পুরুলিয়ায়। গত ৭ নভেম্বর হরিপদ সাহিত্য মন্দিরের অনুষ্ঠানটি হয়। সেখানে যাঁদের দেখা গিয়েছিল, তাঁদের অনেককেই এ দিন দুপুরে ‘দাদার অনুগামী’দের অফিসে দেখা গিয়েছে। ছিলেন জেলা তৃণমূলের দুই সাধারণ সম্পাদক গৌতম রায় এবং নিরঞ্জন মাহাতো, পুরুলিয়া পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর রবিশঙ্কর দাস, বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি সুদীপ মাহাতো, মানবাজার ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সহ সভাপতি বিকাশ মাহাতো, রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতো প্রমুখ।

ওই নেতাদের অনেকেই দাবি করেছেন, তৃণমূলে তাঁদের কথা বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই পরিস্থিতে আলাদা অফিসের দরকার হয়ে পড়েছিল। তবে আলাদা অফিস প্রসঙ্গে পুরুলিয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর নেই। তা ছাড়া, বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিতে চাই না।’’ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেন, ‘‘কোনও নেতার অনুগামীরা আলাদা অফিস খুলতেই পারেন। এর মধ্যে অসুবিধের কিছু নেই। সেখানে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কেউ আলাদা দলে যোগ দেননি।’’

যে এলাকায় অফিসটি হয়েছে, সেটি গৌতমবাবুর পাড়া। সম্প্রতি একটি জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করতে পুরুলিয়ায় এসেছিলেন শুভেন্দু। সেই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা গৌতম। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘জেলার নানা প্রান্ত থেকে অনেকেই নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। দাদার বক্তব্য, মানুষের সঙ্গে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। সে জন্য আলাদা অফিসের খুব দরকার হয়ে পড়েছিল। তা ছাড়া, দলের অফিসে গেলে কেউ কেউ সন্দেহের চোখে দেখছিলেন।’’ গৌতমের দাবি, নতুন অফিসের বিষয়ে শুভেন্দুকে জানানো হয়েছিল। তাঁর সম্মতি মিলেছে।

জেলা তৃণমূলের সদস্য তথা পুরুলিয়ার বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর রবিশঙ্কর দাস এ দিন বলেন, ‘‘দিদির আদর্শ সামনে রেখে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূলে তৃণমূলস্তরের নেতা-কর্মীদের কথার কোনও মূল্য নেই।’’ বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোর ছেলে সুদীপ বলেন, ‘‘জঙ্গলমহল যখন কাঁপছে সে সময় শুভেন্দুদাই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সে কথা তো আমরা ভুলে যেতে পারব না। আর আজ কী হচ্ছে, সবাই দেখতে পাচ্ছেন। দলের অনেকেই হতাশ। জেলায় অফিস হল। এ বার ব্লকে হবে।’’ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জনবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরা এখনও দলেরই সৈনিক। শুভেন্দুদাও দলে রয়েছেন। তৃণমূলের প্রচুর কর্মী এখনও মনে করেন, শুভেন্দুদাকে দলে প্রয়োজন। আমরা চাই, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটে যাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Purulia Suvendu Adhikari TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE