বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশার বালেশ্বরে বীরভূমের অন্তত ১৯ জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক রাখার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও পরিবারের অভিযোগ। এর ফলে শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চিন্তিত পরিবারের লোকজন।
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার দিঘায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যেরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি শাসকদলের বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটিকে জানিয়েছেন। রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্য়সভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম উদ্যোগী হয়েছেন শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে।
এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, বালেশ্বরে আটকে থাকা শ্রমিকদের মধ্যে নলহাটি ২ ব্লকের বারা ২ পঞ্চায়েতের সুকরাবাদ গ্রামের ১৬ জন এবং পাইকর থানা এলাকার রামপুরে ও বুলচাঁদপুরের ৩ জন আছেন। সুকরাবাদের পরিবারের সদস্যেরা দু’দিন আগে গ্রামের তৃণমূল কর্মী মহসিন শেখকে সব জানান। মহসিন স্থানীয় বিধায়ক অশোক চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ শতাব্দী রায়-সহ দলের জেলা কোর কমিটির সদস্যদের জানান। জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সন এবং রাজ্য় বিধানসভা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সামিরুল ইসলামকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। রাজ্যের মুখ্য সচিবের মাধ্যমে আটক শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা শুরু হয়েছে।’’
আটক পরিযায়ী শ্রমিক ও সুকরাবাদের বাসিন্দা সাহিদুর রহমানের স্ত্রী হাবিজা খাতুন বলেন, ‘‘কুরবানির পরে স্বামী ওড়িশা গিয়েছিল। সে প্রসাধনী জিনিস ফেরি করে। যে বাড়িতে ভাড়া থাকে, তার মালিক আমাদের জানান, স্বামী-সহ কয়েক জনকে ৫ দিন থেকে আটক করে রাখা হয়েছে। মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। আমরা সকলেই চিন্তায় আছি।’’ সুকরাবাদেরই বাসিন্দা আব্দুল হাদির স্ত্রী নাদিরা খাতুনের কথায়, ‘‘পেটের দায়েই স্বামী বাইরে খাটতে গিয়েছে। স্বামীর আয়ে সংসার চলে। এখন তাকেই আটক করে রাখা হয়েছে। বাড়িতে ছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছি।’’
সামিরুল ইসলামের অভিযোগ, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষীদের আটকে রাখা হচ্ছে। আমাদের রাজ্যেও বিভিন্ন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের তো কই আটক করা হয় না! এই শিক্ষাটা অন্য রাজ্যের নেওয়া উচিত।’’ সামিরুল জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদ ও মুরারই এলাকার আটক শ্রমিকদের অনেকে ছাড়া পেয়েছেন। অন্যদেরও উদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)