জেলার সব কলেজে টিএমসিপি দখলে নিলেও লাল রয়ে গেল শুধু নিস্তারিণী মহিলা কলেজ। এই নিয়ে নিস্তারিণীতে টানা ছ’বার ছাত্র-সংসদ দখলে রাখল এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও। কেন এমনটা হল? কলেজ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরে এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে জেলার বিভিন্ন মহলে।
জেলার রাজনীতি নিয়ে সচেতন ব্যক্তিদের মতে, গোড়াতেই টিএমসিপি ওই কলেজে ডিএসও-র কাছে পিছিয়ে গিয়েছিল।
রাজ্যে পালাবদলে সময় নিস্তারিণী কলেজে ছাত্রী-রাজনীতির ব্যাটনটা এসএফআইয়ের হাত থেকে কেড়ে নেয় ডিএসও। কলেজের বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও ছাত্রীদের নানা সমস্যা নিয়ে ধারাবহিক ভাবে আন্দোলন করে নিস্তারিণীতে ক্রমশই সংগঠনের ভিত শক্ত করে ডিএসও। ততটাই শক্তিক্ষয় হয় এসএফআই-এর।
অন্যদিকে, সংগঠনে লড়াকু মহিলা নেত্রীর অভাবে জেলার একমাত্র মহিলা কলেজ নিস্তারিণীতে সংগঠন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয় টিএমসিপি। তারই খেসারত দিতে হল এ বারও। এই কলেজে টিএমসিপি এতই দুর্বল যে নিস্তারিণীতে তারা প্রার্থীই দিতে পারেনি। টানা ছ’বছর ধরে ডিএসও ওই কলেজের ক্ষমতা ধরে রাখে।
পুরুলিয়ার ১২টি কলেজে বৃহস্পতিবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। ফল প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, ১১টি কলেজে জিতেছে টিএমসিপি। তার মধ্যে অর্ধেকের বেশি কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতে টিএমসিপি। পুরুলিয়ার জগন্নাথ কিশোর কলেজ, রঘুনাথপুর কলেজ, কাশীপুর কলেজ, সুইসা কলেজ ও বলরামপুর কলেজে বিরোধীশূন্য হয়েছে। শুধু লালপুরের মহাত্মা গাঁধী কলেজ ও ঝালদার অচ্ছ্রুরাম মেমোরিয়াল কলেজে বাদ দিয়ে কার্যত কোনও কলেজেই একটিও আসনে জিততে পারেনি বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলি।
আর সেই প্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে টিএমসিপির দাপট কেন আটকে গেল নিস্তারিণীতে?
নিস্তারিণীতে ২২টি আসনের মধ্যে ২১টিতেই জিতেছে ডিএসও। একটিতে এসএফআই। তারা ভোটে বিশেষ সুবিধা করতে না পারলেও অন্তত প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু টিএমসিপি সেটাও পারেনি। ডিএসও-র পুরুলিয়া জেলা কমিটির সদস্য তথা কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত যশোদা মাহাতো বলেন, ‘‘ছাত্রীদের দাবি নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন করেই ডিএসও ছাত্র সংসদ দখল করছে। কাজ করছে বলেই বছরের পর বছর জয় আসছে।’’
টিএমসিপি কেন পিছিয়ে? সংগঠনের জেলাস্তরের এক নেতার কথায়, ‘‘মহিলা কলেজে বাইরে থেকে বিশেষ কিছু করা যায় না। কলেজের ভিতরে আমাদের সমর্থক হয়তো কিছু আছেন, কিন্তু তাদের ধরে কলেজের মধ্যে সংগঠন তৈরির কাজটা করার মতো মহিলা নেতৃত্ব নেই সংগঠনে।’’ এত বছরেরও কেন তা হল না? টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি নিরঞ্জন মাহাতো বলেন, ‘‘মাঝে একবার ওই কলেজে সংগঠন করার চেষ্টা হলেও তা বেশিদূর এগোয়নি। তবে এ বার আমরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই ওই কলেজে সংগঠন করতে নামব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy