Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Shyamal Santra

রেল-বস্তি আবার উচ্ছেদের চেষ্টা, দাবি শ্যামলের

স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে পাটপুর এলাকায় রেললাইনের পাশে মাটি সমান করার কাজ করছিলেন রেলের তরফে নিযুক্ত কর্মীরা। অভিযোগ, ওই এলাকার কয়েকটি বাড়ির সদস্যদের ওই কর্মীরা জানান, বাড়ি ভাঙা হবে।

ঘটনাস্থলে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

ঘটনাস্থলে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

পুনর্বাসন দেওয়ার আগে উচ্ছেদ নয়— বাঁকুড়ায় রেলের জমি দখলমুক্ত করার প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে এ কথাই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জেলা প্রশাসন ও জেলার জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেন। তার কয়েক দিনের মধ্যেই রবিবার বাঁকুড়া শহরের পাটপুর এলাকার রেলগেটে রেলের তরফে উচ্ছেদের চেষ্টা চালানো হল বলে অভিযোগ। রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা গিয়ে তা থামান।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকালে পাটপুর এলাকায় রেললাইনের পাশে মাটি সমান করার কাজ করছিলেন রেলের তরফে নিযুক্ত কর্মীরা। অভিযোগ, ওই এলাকার কয়েকটি বাড়ির সদস্যদের ওই কর্মীরা জানান, বাড়ি ভাঙা হবে। তারপরেই স্থানীয়েরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান শ্যামলবাবু। রেলের তরফে নিযুক্ত শ্রমিকদের কাজ থামিয়ে দেন তিনি। স্থানীয় লোকজনকে তিনি নির্দেশ দেন, এলাকায় ‘দলের পতাকা’ ও ‘দিদিমণির ছবি দেওয়া ফ্লেক্স’ লাগাতে। রেলের তরফে নিযুক্ত শ্রমিকদের শ্যামলবাবুকে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় একটি ভিডিয়ো ফুটেজ়ে (সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)।

এরপরেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক বৈঠকে জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই পুনর্বাসন না দিয়ে রেলের জমিতে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করা যাবে না। তারপরেও রেল উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে শুনেই এলাকায় গিয়ে প্রতিবাদ জানাই।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘বিজেপির প্ররোচনাতেই ওই জমির বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে উদ্যত হয়েছে রেল।”

অভিযোগ অস্বীকার করে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার দাবি করেন, “তৃণমূল বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে। গত দু’বছর ধরে আমি জেলা প্রশাসনের কাছে ওই মানুষগুলিকে জমির পাট্টা দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। সে কাজ তো প্রশাসন করছে না।” তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারকে রেলের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছিলেন। কিন্তু জেলা প্রশাসন তা-ও করেনি। আমি শনিবার কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীকে ভার্চুয়াল বৈঠকে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও এ দিন দাবি করেছেন, পুনর্বাসনের আগে যাতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো না হয়, সে জন্য দ্রুত জেলা প্রশাসন রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করুক। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই আদ্রা ডিভিশনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে বাঁকুড়ায় উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার কথা বলা হয়। এ দিন জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখার জন্য রেলকে প্রশাসনের তরফে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।” রেলের আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম নবীন কুমার বলেন, “বাঁকুড়ায় রেলের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা শাসকের চিঠি পাইনি। এ দিন বিকেল পর্যন্ত আমার কাছে আসেনি। হতে পারে রেলের আধিকারিকেরা এ দিন সেখানে গিয়েছিলেন। কী ঘটেছে জানা নেই। নিয়ম অনুযায়ী রেলের জমি রেলের হাতেই থাকবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways Shyamal Santra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE