প্রতীকী ছবি
টাকা দিতে অস্বীকার করায় শ্বশুরকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ বোরো থানার ডাঙ্গরডি গ্রামের ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম ছুটুলাল মাহাতো (৫৭)। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছুটুলালের স্ত্রী সারথি মাহাতো, দাদা লক্ষ্মীকান্ত মাহাতো এবং বড় মেয়ে আশালতা। রবিবার রাতেই আশালতার স্বামী, অভিযুক্ত শম্ভু মাহাতোকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো ঘটনাটিই ঘটেছে শম্ভুর ৯ বছরের ছেলের চোখের সামনে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছুটুলালের তিন মেয়ে। তিন জনেই বিবাহিত। বড় মেয়ে আশালতার স্বামী শম্ভু শ্বশুরবাড়িতেই থাকেন। বছর খানেক আগে বাঁকুড়ার রানিবাঁধে শম্ভুর মেয়ের বিয়ে হয়েছে। কিছু দিন আগে শম্ভু শ্বশুরের কাছে মেয়ের সাধ ভক্ষণের অনুষ্ঠানের জন্য টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না চাওয়ায় শ্বশুর ও জামাইয়ের মধ্যে ঝামেলা চলছিল।
আশালতা বলেন, ‘‘বাবা আমাদের জমি তিন জামাইকে চাষ করার জন্য সমান ভাবে ভাগ করে দিয়েছিলেন। আমার স্বামী কোনও কাজ করতে চাইতেন না। নেশা করে বেড়াতেন। কিছু দিন হল মেয়ের সাধ খাওয়ানোর জন্য বাবার কাছে টাকার তাগাদা করছিলেন। জমি বন্ধক দিয়ে টাকা জোগাড় করতে চাইছিল।’’ তাঁর দাবি, ছুটুলাল এই প্রস্তাবে রাজি হননি। আশালতা জানান, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ মত্ত অবস্থায় বাড়ি ফিরেছিলেন শম্ভু।
আরও খবর
আগাম জামিনের আবেদন বিক্রমের
ছুটুলালের ঘর থেকে তিনি শ্বশুর আর জামাইয়ের ঝগড়ার আওয়াজ পেয়েছিলেন। কিন্তু রোজকার ঝামেলার মতোই কিছু একটা হচ্ছে ভেবে বিশেষ আমল দেননি।
আশালতা বলেন, ‘‘আমি অন্য ঘরে ছিলাম। হঠাৎ বাবার চিৎকার শুনে ছুটে যাই। দেখি বাব মাটিতে পড়ে। রক্তে গোটা ঘর ভেসে যাচ্ছে। আমার স্বামী তলোয়ার হাতে দাঁড়িয়ে।’’ তিনি জানান, সেই সময়ে তাঁর মা সারথি এবং জেঠা লক্ষ্মীকান্ত ছুটে আসেন। তিন জন মিলে শম্ভুর হাত থেকে তলোয়ার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। শম্ভু তাঁদেরও কোপ মারেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ঘরে ঘটনাটি ঘটে, তার এক কোনে শুয়েছিল শম্ভু ও আশালতার ৯ বছরের ছেলে। ঘটনার পরে প্রথমে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল সে। পরে পুলিশকে পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়েছে ওই বালক।
চিৎকার চেঁচামেচি শুনে পড়শিরা এসে শম্ভুকে আটকান। জখম তিন জনকে উদ্ধার করে মানবাজার ২ ব্লকের বসন্তপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আশালতা এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন। রবিবার রাতেই লক্ষ্মীকান্ত এবং সারথিকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
লক্ষ্মীকান্তর ছেলে পাণ্ডব মাহাতোর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় শম্ভুকে। সোমবার পুরুলিয়া আদালতে তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে। পুলিশের দাবি, শম্ভু জানিয়েছে, তার এক ভায়রাভাই নিজের ভাগের জমি বন্ধক দিলেও তাঁর ক্ষেত্রে ছুটুলাল রাজি হননি। উল্টে তাঁকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এতেই তার মাথায় রোখ চেপে যায়।
এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার বলেন, ‘‘নথিপত্র তৈরি করে শম্ভু মাহাতোকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy