Advertisement
E-Paper

গভীর রাতে বাজিমাত শব্দবাজির

বাঁকুড়া শহরের পাঠকপাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কোথায় শব্দবাজিতে লাগাম পড়ল?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ১২:০৫

কালীপুজোর রাতে টেক্কা দিল বাঁকুড়া। আর বিষ্ণুপুর খেল দেখাল দেওয়ালিতে। শব্দবাজির দাপট রুখতে পুলিশ কড়া নজর রাখার দাবি করলেও আখেরে শব্দ যে জব্দ হল না, তা টের পেলেন জেলার দুই বড় শহরের বাসিন্দারা। জেলার বাকি ব্লক সদর থেকে গ্রামাঞ্চলেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি ফাটল।

বস্তুত, কালীপুজোর সন্ধ্যাতেই জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি ফাটানোর শব্দ শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু, তা ছিল অনেকাংশে সহ্যের মধ্যে। কিন্তু, রাত যত গড়িয়েছে বাঁকুড়া শহরে শব্দবাজির দাপটও ততই বেড়েছে বলেই দাবি এলাকাবাসীর। বিষ্ণুপুরেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বাজি ফাটলেও, মঙ্গলবার তা বারের তুলনায় কিছুটা কম ছিল বলে অনেকের মত। কালীপুজোর দুপুরে শহরের গোডাউন থেকে প্রচুর নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করাতেই সেই সাফল্য বলে দাবি করে পুলিশ। যদিও বুধবার সন্ধ্যা নামতেই বিষ্ণুপুর বাজির শব্দে বুঝে যায়, শহরটা বদলায়নি। কানফাটানো শব্দ ফেটে চলে বাজি। বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরেও এত বাজি এল কোথা থেকে, এই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

মঙ্গলবারের বাজি ফাটানোর দাপট দেখে বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, সুপ্রিমকোর্ট রাত আটটা থেকে দু’ঘণ্টা কম দূষণের বাজি পোড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু, বাস্ততে অনেকে যে অমান্য করে গভীর রাত পর্যন্ত বাজি ফাটাল, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল না কেন?

বাঁকুড়া শহরের পাঠকপাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘কোথায় শব্দবাজিতে লাগাম পড়ল? অন্যবারের মতোই এ বারও কালীপুজোয় রাতভর শব্দবাজি ফেটেছে। কালীপটকার চেন থেকে চকোলেট বোমা কিছুই বাদ যায়নি। পিলে চমকানো বাজি ফাটার শব্দে গভীর রাত পর্যন্ত ঘুমানো যায়নি।’’ বাঁকুড়া শহরের নাট্যব্যক্তিত্ব মধুসূদন দরিপার ক্ষোভ, “পাড়ায় পাড়ায় সাউন্ডবক্সের মাতামাতি আর শব্দবাজির তাণ্ডব কোনও মাত্রায় এ বারে কম ছিল না। এ সব রুখতে প্রশাসন বা পুলিশের কোনও রকম সক্রিয়তা ছিল বলে টের পেলাম না।’’

যদিও শহরের আর এক বাসিন্দা সমীরণ সেনগুপ্তের দাবি, শব্দবাজি ফাটলেও অন্যবারের তুলনায় কিছুটা কমেছে বলেই মনে হয়েছে। তাঁর মতে, “শব্দবাজি ফাটানো বন্ধ হবে এটা আশা করেছিলাম। অন্যবারের তুলনায় কিছুটা কমলেও বন্ধ হয়নি। বরং মাঝে মধ্যেই বাজির তীব্র শব্দে চমকে উঠেছি। পুলিশ ও প্রশাসনের আরও সক্রিয়তা দরকার।” যদিও বাঁকুড়ার এক পুলিশ কর্তার দাবি, ‘‘শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ কোনও এলাকা থেকেই আসেনি। রাতভর বাঁকুড়া শহরে পুলিশি
টহল ছিল।’’

এ দিকে, কালীপুজোর সকাল থেকেই বিষ্ণুপুর শহরে বিক্ষিপ্ত ভাবে শব্দবাজি ফাটতে দেখা গেলেও দুপুরে বাজি বাজেয়াপ্তের খবর চাউর হতেই বিক্রিবাটা বন্ধ হয়ে যায়। দুর্গাপুজোর সময়েও এই শহরের বেশ কিছু বাজির দোকানে কালীপটকার চেন বিক্রি করতে দেখা গিয়েছিল। আড়ালে চকোলেট বোমাও বিক্রি হয়েছে
বিভিন্ন জায়গায়।

কিন্তু, কালীপুজোর বিকালের পর থেকে আর কোনও ধরনের শব্দবাজিই বিক্রি হতে দেখা যায়নি বলে বাসিন্দারা জানাচ্ছেন। বাজির দোকানগুলিতে কানপাতলেই শোনা যাচ্ছিল, পুলিশের অভিযান নিয়ে চর্চা। শহরের বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, অনেক রাত পর্যন্ত বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় সাউন্ডবক্স দাপালেও শব্দবাজি তেমন ফাটতে দেখা যায়নি।

কিন্তু, দেওয়ালি সন্ধ্যা সেই স্বস্তি মুছে দিয়ে ফাটতে থাকে বাজি।

Pollution Environment Sound Pollution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy