সোমবার রবীন্দ্রনাথের কর্মভূমি বোলপুর থেকেই বাঙালি অস্মিতা ও পরিযায়ীদের উপর অত্যাচার নিয়ে পথে নামছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নেতাকর্মীদের মতে, বিজেপিকে নিশানা করে এই কর্মসূচি থেকেই কার্যত পরের বছর বিধানসভা ভোটের সুর বেঁধে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। অনেকের আবার মতে, এই সফর ‘সমম্বয়হীনতায়’ ভুগতে থাকা দলের জেলা নেতাদেরও বার্তা দেওয়ার জন্যও প্রয়োজনীয়।
জেলার বাইরের প্রেক্ষিত ধরলে, বীরভূম থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট-লড়াইয়ের সূচনা আজ, পদযাত্রা থেকেই শুরু হয়ে যাবে বলে মত তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। বাঙালির মর্যাদা ও বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার জন্য যে তিনি লড়বেন, একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে সেই দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার নিয়েও সরব হয়েছিলেন। দলের নেতা কর্মীদের আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষিত সেই ‘ভাষা-সন্ত্রাসের’ প্রতিবাদ সূচির সূচনা হচ্ছে বীরভূমের মাটি থেকে। দলের নেতাকর্মীরা যথাসম্ভব চেষ্টা করছেন চাষের ভরা মরসুমেও বোলপুর শহরে জনজোয়ার এনে দিতে।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের সূত্র ধরে মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচিতে পরিযায়ী পরিবারের সদস্যরা থাকবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে। পাইকর এলাকার বাসিন্দা দুটি পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের ছ’জন সদস্যকে (এক অন্তঃসত্ত্বা সহ দুই মহিলা ও তিন নাবালক) দিল্লি পুলিশ পুশব্যাক করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে তৃণমূলের একটি সূত্রে দাবি, সেই পরিবারের লোকজনকে সম্ভবত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ডাকা হয়নি। তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, ‘‘এটা অন্য কর্মসূচি। মুখ্যমন্ত্রী যে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে রয়েছেন, তা সবাই জানেন।’’
আবার জেলা তৃণমূলের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর সফর প্রয়োজন ছিল বলেই জানাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের কথায়, ‘‘মুখে একত্রিত থাকার কথা বললেও জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বহাল। একযোগে চলতে না পারলে ভোট যুদ্ধে যাওয়ার আগে দলের শক্তিক্ষয় রোখা যাবে না।’’ আর এক নেতা বলছেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে দু’জন তৃণমূল নেতা খুন হয়েছেন জেলায়। দলনেত্রী নিশ্চয়ই বার্তা দেবেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)