বাঁকুড়া মেডিক্যালে তারক হেমব্রম। নিজস্ব চিত্র
উত্তর দিনাজপুরে ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে বন্ধ ডেকেছিল বিজেপি। আর বন্ধের দিনে খোলা থাকা স্কুল বন্ধ করাতে গিয়ে এক ছাত্রকেই মারধর করার অভিযোগ উঠল। বুধবার বাঁকুড়ার রাইপুর ব্লকের মণ্ডলকুলি পঞ্চায়েতের আমচূড়া বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের ঘটনা। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক রাইপুর থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, অভিযুক্তেরা এলাকায় বিজেপির কর্মী সমর্থক বলে পরিচিত। গেরুয়া শিবিরের পাল্টা দাবি, বিজেপি ‘সেজে’ তৃণমূলের লোকজনই এই কাজ করেছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বুধবার নির্মল বিদ্যালয় অভিযানে স্কুলে সাফাই চলছিল। তাঁদের দাবি, দুপুর ১টা নাগাদ কিছু লোকজন হাজির হয়। অনেকের হাতে লাঠি ছিল। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অশ্বিনী কুণ্ডুর দাবি, স্কুল কেন খোলা হয়েছে তা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথাকাটাকাটি শুরু হয়েছিল। এরই মধ্যে হাত ধোয়ার সাবান নিতে কিছু পড়ুয়া যাচ্ছিল অফিসে। তাদের স্কুল থেকে চলে যেতে বলেন বন্ধের সমর্থকেরা।
ওই পড়ুয়াদের মধ্যে ছিল রাইপুরের বেনাশুলির বাসিন্দা, দ্বাদশ শ্রেণির তারক হেমব্রম। সে বলে, ‘‘ওরা আমাদের হুমকি দিচ্ছিল। এক বন্ধুকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আমি প্রতিবাদ করলে লাঠি দিয়ে মাথায় মারে।’’ শিক্ষকদের একাংশের দাবি, তাঁরা বেরিয়ে আসতেই বন্ধ সমর্থকেরা স্কুল ছাড়েন। তারককে নিয়ে যাওয়া হয় রাইপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মাথায় আঘাত থাকায় রাতে সিটি স্ক্যান করানোর জন্য তাকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই পরীক্ষা করানো হয়েছে বলে জানান তারকের বাবা ভীমচন্দ্র হেমব্রম।
বৃহস্পতিবার আমচূড়া বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা এলাকায় একটি মিছিল করেন। ওই স্কুলের শিক্ষক মধুসূদন মণ্ডল বলেন, “আগে কখনও স্কুলে এই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমরা চাই দোষীরা শাস্তি পাক।” ভীমচন্দ্রবাবু বলেন, “স্কুল খোলা ছিল তাই তো গিয়েছিল! ছেলেটার বড়সড় বিপদ হয়ে যেতে পারত।’’
এ বারের ভোটে মণ্ডলকুলি পঞ্চায়েতের ১৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে জিতেছে নিয়েছে বিজেপি। বোর্ড গড়ে ফেলেছে তারা। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, অভিযুক্তেরা এলাকায় বিজেপির কর্মী সমর্থক বলেই পরিচিত। জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান বলেন, “এই ঘটনা নিন্দা করার ভাষা নেই। আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করুক। দোষীদের শাস্তি হোক।’’ বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র অবশ্য দাবি করেছেন, ঘটনায় তাঁদের দলের কেউ জড়িত নয়।
তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে জয় শ্রী রাম ধ্বনি তুলে বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছিল তৃণমূল। বন্ধের দিন আমাদের দুর্নাম করতে ওরা বিজেপি সেজে স্কুলে গিয়ে হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy