E-Paper

নাবালিকা বিবাহ নয়, শপথ নিয়ে ভর্তি স্কুলে

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, সরকারি নানা প্রচারের পরেও বাল্য বিবাহকে সমূলে উৎপাটন করা যায়নি। আইনের ফাঁক গলে এখনও বহু নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হয়।

সমীর দত্ত

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:১৯
অঙ্গীকারপত্রে সই।

অঙ্গীকারপত্রে সই। নিজস্ব চিত্র।

১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে করব না, কারও প্ররোচনায় পা দেব না। স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগে এই বয়ান লেখা মুচলেকায় সই করতে হচ্ছে ছাত্রী ও অভিভাবকদের। বাল্য বিবাহ রুখতে মানবাজার গার্লস হাই স্কুলের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হচ্ছে বিভিন্ন মহলে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, সরকারি নানা প্রচারের পরেও বাল্য বিবাহকে সমূলে উৎপাটন করা যায়নি। আইনের ফাঁক গলে এখনও বহু নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হয়। তবে স্কুলে যদি কোনও কিশোরীকে বাল্য বিবাহ সম্বন্ধে সতর্ক করা হয়, তা ফলপ্রসূ হতে পারে। তাই পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির সময় থেকেই উদ্যোগী হয়েছে স্কুল। ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রমীলা হাঁসদা বলেন, “স্কুল তো শুধু বই পড়ার জায়গা নয়। সমাজ সংস্কারেও স্কুলের ভূমিকা রয়েছে। স্কুল পরিচালন সমিতির নির্দেশ মেনে অঙ্গীকারপত্রে সই করিয়ে ছাত্রীদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।” ওই অঙ্গীকারপত্রে লেখা রয়েছে, ‘আমি মানবাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন জানিয়েছি। বিদ্যালয়ে ভর্তির শর্ত মেনে আমি অঙ্গীকার করছি যে ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে করব না এবং কারও প্ররোচনায় পা দেব না। যদি এই শর্ত কোনও ভাবে লঙ্ঘিত হয় তাহলে ভবিষ্যতে আমার পরিবারের কোনও ছাত্রী বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।’ মঙ্গলবার মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করাতে এসেছিলেন শিবানী মান্ডি, উজ্জ্বল মণ্ডল, সঞ্জীব সিংহেরা। স্কুলের এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।

স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি মনোজ মুখোপাধ্যায়ের বলেন, “আমাদের স্কুলে প্রায় ২১০০ ছাত্রী রয়েছে। তারা যদি কম বয়সে বিয়ে রুখতে সক্রিয় ভূমিকা নেয় তাহলে নাবালিকা বিবাহ অনেকটাই ঠেকানো সম্ভব বলে মনে হয়। আমরা পড়াশোনার সঙ্গে সামাজিক দায়িত্ব পালনেরও চেষ্টা করছি।”

মানবাজার ১ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সুদীপ বেরার কথায়, “এ ভাবেও যদি নাবালিকা বিয়ে আটকানো যায় তবে খারাপ কী।” সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মহুয়া বসাকও। তিনি বলেন, “মানবাজার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় নজির গড়ল।”

স্থানীয় রামকৃষ্ণ নন্দী, বিধান মণ্ডলেরা বলছেন, “অন্য স্কুলগুলিও এ ভাবে এগিয়ে এলে নাবালিকা বিবাহ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

manbazar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy