স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে ভেষজ আবির তৈরিতে ব্যস্ত পড়ুয়ারা। — নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার হোলি। আর হোলি মানেই একে অপরকে রাঙিয়ে দেওয়া। উপকরণ বাজার চলতি আবির আর বাঁদুরে রং। তবে এ বার বর্ষা, অরিত্রদের কাছে দোলের অর্থ বদলেছে। পরিবারের কিনে দেওয়া বাজার চলতি রং নয় , নিজেদের হাতে তৈরি ভেষজ রঙে এ বার একে অপরকে রাঙাবে তারা। তাই উৎসাহের অন্ত নেই বাঁকুড়ার দুবড়াকোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদে পড়ুয়াদের। স্কুলের টিফিনের বিরতিতে রং তৈরির আস্ত কারখানা হয়ে উঠছে স্কুল চত্বর।
বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামের এক প্রান্তে দুবড়াকোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলের আশপাশে পলাশের সমারোহ। কিন্তু গত এক দশক ধরে বাজার চলতি রাসায়নিক রঙের রমরমায় পলাশের তেমন কদর ছিল না। প্রকৃতির নিয়মে বসন্তে লাল রঙা পলাশ ফুটে আবার ঝরে যেত নিজস্ব নিয়মেই। তবে এ বার দোল আসতেই দুবড়াকোন গ্রামের পলাশ বনে আবার শুরু শিশুদের আনাগোনা। স্কুলের শিশুরা কুড়িয়ে নিচ্ছে শুকনো পলাশ, শিমুল ফুল। ফুল শুকিয়ে তা থেকে তৈরি হবে ভেষজ আবির। স্কুলের শিক্ষকরা হাতে কলমে পড়ুয়াদের শিখিয়ে দিয়েছেন কী ভাবে শুকনো পলাশ ও শিমুল ফুল গুঁড়ো করে তার সাথে হলুদ গুঁড়ো, বীট-গাজর, পালং শাকের নির্যাস মিশিয়ে তৈরি করতে হবে বিভিন্ন রঙের ভেষজ আবির। এক সপ্তাহ আগে থেকেই স্কুলের টিফিন বিরতিতে টিফিন নাওয়া খাওয়া ভুলে পড়ুয়ারা লেগে পড়ছে আবির তৈরিতে।
স্কুলের চতুর্থ শ্রেনীর ছাত্রী বর্ষা ভুঁই বলছে, “এত দিন বাবা, মা যে রং ও আবির কিনে দিতেন তা দিয়েই রং খেলতাম। কখনও ভাবিনি নিজেরাই রং ও আবির তৈরি করে তা দিয়ে দোল খেলব। আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাদের রং ও আবির তৈরির পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছেন। তার পর থেকে আমরাই আবির তৈরি করছি।” পড়ুয়াদের এমন উৎসাহ দেখে খুশি শিক্ষকরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy