Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
এসইউসির কার্যালয়ে তাণ্ডব, হুমকি

ভাঙার কথা পাঁচিল, ছাদ ধসিয়ে আটক ৩

আয়েষা খাতুন জানান, রামপুরহাট শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১২৭/১০ হোল্ডিং নম্বরে দোসাদপাড়ায় ৫০–৬০ বছরেরও বেশি সময় এসইউসির এই কার্যালয়টি আছে।

দখল: ভাঙচুরের পরে রামপুরহাটের দেশবন্ধু রোড এলাকার পার্টি অফিস। রবিবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

দখল: ভাঙচুরের পরে রামপুরহাটের দেশবন্ধু রোড এলাকার পার্টি অফিস। রবিবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

পুরসভার নির্দেশ ছিল, এসইউসির পার্টি অফিস লাগায়ো জীর্ণ পাঁচিল ভেঙে ফেলার। জায়গার দখল পেতে মওকা বুঝে পার্টি অফিসের ছাদ ধসিয়ে অফিসের ভিতরে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। ভাঙচুরে বাধা দিতে গেলে দলের মহিলা, বয়স্ক কর্মীদের মারধরও করা হয়। রবিবার সকালের রামপুরহাট দেশবন্ধু রোড এলাকার এই ঘটনায় এসইউসির বীরভূম জেলা কমিটির সদস্য, রামপুরহাট মহকুমার সম্পাদক আয়েষা খাতুন বাড়ির তিন মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির তিন মালিককে আটক করেছে পুলিশ।

আয়েষা খাতুন জানান, রামপুরহাট শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১২৭/১০ হোল্ডিং নম্বরে দোসাদপাড়ায় ৫০–৬০ বছরেরও বেশি সময় এসইউসির এই কার্যালয়টি আছে। ওই হোল্ডিং নম্বরের মালিক আলিফ শেখের অধীনে ভাড়াটিয়া হিসাবে ওই ঘর দখলেও রয়েছে। রামপুরহাট রেন্ট কন্ট্রোল অফিসে ভাড়া দেওয়া হয়। এসইউসি সূত্রের দাবি, ভাড়া নিয়ে কয়েক দশক ধরে মনোমালিন্য চলছে। তার জেরে বাড়ির মালিকেরা দীর্ঘ দিন ধরে উচ্ছেদের চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন। সংলগ্ন পাঁচিল ভাঙার নির্দেশ পেতেই বাড়ির মালিকেরা ঘর ভেঙে দেওয়ার মতলব আঁটেন বলে এসইউসি সূত্রের অভিযোগ।

এসইউসির দাবি, শাবল-গাঁইতি নিয়ে রবিবার সকালে পঞ্চাশ-ষাট জন পার্টি অফিসে চড়াও হয়। শুরু হয় ভাঙচুর। দুপুরে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, পার্টি অফিসের ছাদ প্রায় ভেঙে ফেলা হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে শৌচালয়েরও। ভাঙচুরের স্পষ্ট চিহ্ন পার্টি অফিসের ভিতরেও। সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে আসবাব, আলমারি, ক্যাশবাক্স, ফাইলপত্র। কিছু জিনিসের হদিস মিলছে না বলেও দাবি নেতৃত্বের। আয়েষা খাতুন জানান, বেশ কিছু দিন ধরে কার্যালয় ছেড়ে দেওয়ার জন্য মালিকপক্ষ প্রস্তাব তাঁদের প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। তাতে তাঁরা রাজি হননি। আয়েষার কথায়, ‘‘সেই ক্ষোভেই বাইরে থেকে দুষ্কৃতী এনে অফিস ঘর চড়াও হয়ে ভাঙতে শুরু করে। খবর পেয়ে আমাদের কর্মীরা বাধা দিতে গেলে মহিলা ও পুরুষ কর্মীদের মারধর, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।’’ ওই সময়ে আশপাশ থেকে লোক জড়ো হলে তাঁরাই থানায় খবর দেয়। পুলিশ আসার আগেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। তারপরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় বাড়ির তিন জন মালিককে।

পার্টি অফিসে তাণ্ডব এবং মারধরের ঘটনা সবিস্তারে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক এবং মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে এসইউসির তরফে জানানো হয়েছে। লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে জেলা পুলিশ সুপারকেও। মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘একটি রাজনৈতিক দলের পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগ এসেছে। সব দিক দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বাড়ির মালিকদের পক্ষে জামির শেখ অবশ্য দাবি করেছেন, পুরসভার নির্দেশ মেনেই শ্রমিক দিয়ে ঘর ভাঙা হচ্ছিল। রামপুরহাটের পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি অবশ্য বলছেন, ‘‘এসইউসির দলীয় কার্যালয় লাগোয়া একটি জীর্ণ পাঁচিল ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই পাঁচিল নিয়ে অভিযোগ ছিল। কিন্তু, কোনও দলের কার্যালয় ভাঙতে বলা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Party Office SUCI Rampurhat এসইউসি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE