ভিন্-দেশে সন্তান জন্মালে, শিশুর নাগরিকত্বজনিত কারণে দেশে ফেরায় জটিলতা বাড়বে না তো! এমনই উদ্বেগে রয়েছেন বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিক সোনালি বিবির বাড়ির লোক।সোনালি-সহ ছ’জনকে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সোনালির বাড়ির লোকের আশঙ্কা, সন্তান জন্মালে দেশে ফেরা আরও কঠিন না হয়। তবে বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, সোনালি এখনও সন্তানের জন্ম দেননি। তিনি, তাঁর স্বামী দানিশ শেখ ও নাবালক সন্তান-সহ ছ’জন এখনও সে দেশের সংশোধনাগারে রয়েছেন।
সোনালি প্রায় ন’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বুধবার বীরভূমের পাইকরে, তাঁর মামাতো ভাই রকি শেখ বলেন, ‘‘দিদি আসন্নপ্রসবা না হলে ওদের ফেরা নিয়ে উৎকন্ঠা থাকলেও, খুব বেশি দুশ্চিন্তা থাকত না। কিন্তু ও দেশে সন্তানের জন্ম দিলে, আইনি জটিলতা বেড়ে যাওয়া নিয়েই দুশ্চিন্তা।’’ বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলা পুলিশের এক কর্তা অবশ্য জানান, সোনালির বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। কোনও আইনি জটিলতায় সোনালি পড়ুন, তা তাঁরাও চাইছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘অনুপ্রবেশকারী হিসাবে ভারত থেকে এখানে এসেছেন ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। সেটা আইনি প্রক্রিয়ায় লেখা হয়েছে। শিশুর জন্ম যে দেশে হবে, জন্মসূত্রে তার সে দেশের নাগরিক হওয়ার কথা। তবে যেহেতু ভারত থেকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অবৈধ ভাবে তিনি এখানে এসেছেন, তাই সন্তানের জন্ম দিলেও বিষয়টি জটিল হওয়ার কথা নয়।’’
দিল্লিতে কর্মরত বীরভূমের পাইকরের দু’টি পরিবারের দুই মহিলা (সোনালি ও সুইটি বিবি) এবং তিন নাবালক-সহ ছ’জনকে বাংলাদেশি সন্দেহে দিল্লি পুলিশ গত জুনে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করে বলে অভিযোগ। গত ২০ অগস্ট তাঁদের ধরে চাঁপাই নবাবগঞ্জের সদর মডেল থানার পুলিশ।
কলকাতা হাই কোর্টে দু’টি পৃথক মামলা হয়েছে ওই ছ’জনকে ফিরে পেতে। রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘যতক্ষণ সোনালিরা দেশে না ফিরছেন, ততক্ষণ ওঁদের পরিবারের পাশে আছি। ২২ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির ব্যাপারে আশাবাদী।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)