Advertisement
১৮ জুন ২০২৪
পাড়ুইয়ের সভায় হুমকি মামলা

বিরোধীদের প্রশ্নই অস্ত্র অনুব্রতর আইনজীবীর

যুক্তিগুলিকে তুলে ধরে গোটা মামলায় জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার পাড়ুইয়ে হুমকি মামলার চূড়ান্ত শুনানিতে ‘পুলিশি গাফিলতি’র সেই যুক্তিগুলিকেই পাল্টা হাতিয়ার করলেন অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী মৃদুল হক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫২
Share: Save:

যুক্তিগুলিকে তুলে ধরে গোটা মামলায় জেলা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার পাড়ুইয়ে হুমকি মামলার চূড়ান্ত শুনানিতে ‘পুলিশি গাফিলতি’র সেই যুক্তিগুলিকেই পাল্টা হাতিয়ার করলেন অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী মৃদুল হক।

সরকারি আইনজীবী রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মামলার সাপেক্ষে এত দিন ধরে যে নথিপত্র, তথ্য প্রমাণ এবং সাক্ষ্যদান হয়েছে, তার ভিত্তিতে এ দিন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী এবং তিনি নিজেদের যুক্তি লিখিত আকারে সিউড়ির সিজেএম নিরুপম করের এজলাসে জমা দিয়েছেন। সেই লিখিত বক্তব্যেই পুলিশের ওই সব গাফিলতি ও ফাঁকফোকর তুলে ধরেই নিজের মক্কেলকে বেকসুর খালাসের দাবি জানিয়েছেন মৃদুলবাবু।

সে কথা জানিয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমকে মৃদুলবাবু বলেন, ‘‘প্রথমত, সাক্ষ্যদানকারী পাঁচ পুলিশকর্মীর কেউ-ই অনুব্রতর ওই বক্তব্যের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। বক্তব্যের জেরে এলাকায় কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, এমন প্রমাণও তাঁরা দেননি। সব চেয়ে বড় কথা যে বক্তব্য নিয়ে এই মামলা, সেই বক্তব্য যে আমার মক্কেলই রেখেছিলেন— তা-ও প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ।’’ পাশাপাশি তাঁর যুক্তি, কার থেকে সিডি সংগ্রহ করল তা জানায়নি পুলিশ, সেই তাঁকে এবং এলাকার কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধিকেও এই মামলায় সাক্ষী করেনি পুলিশ। ‘‘এই সব যুক্তির কথাই বিচারককে লিখিত আকারে জানিয়েছি। ন্যায়ের পক্ষে সিদ্ধান্ত তিনি-ই নেবেন,’’—বলছেন ওই আইজীবী। আগামী ২১ ডিসেম্বর এই মামলার রায় দেবেন বিচারক।

২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে পাড়ুইয়ের কসবার সভায় পুলিশের উপরে ‘বোম’ মারা এবং নির্দল প্রার্থীদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত। ওই বক্তৃতার পরেই কসবা অঞ্চলে একাধিক নির্দল প্রার্থীর (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল) বাড়িতে হামলা, বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। খুন হন নির্দল প্রার্থী হৃদয় ঘোষের বাবা সাগরচন্দ্র ঘোষও।

গত বছর ডিসেম্বরে সিউড়ি আদালতে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। জামিনযোগ্য ধায়ায় অনুব্রতর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। মোট পাঁচ পুলিশকর্মী সাক্ষ্য দিলেও আদালতে তাঁরা এমন কোনও তথ্য দেননি, যা অনুব্রতর বিরুদ্ধে যেতে পারে। এমনকী, যে অনুব্রতর বক্তব্যের যে সিডি-ডিভিডি ফরেন্সিক টেস্টে পাঠানো হয়েছিল, সেই বক্তব্য আদৌ অনুব্রতই কিনা তা বোঝার জন্যও পুলিশ অনুব্রতর প্রকৃত কণ্ঠস্বরের নুমনা ল্যাবে পাঠায়নি। সিপিএমের এক নেতার দাবি, ‘‘এ সব কিছুই প্রমাণ করে, গোটা মামলায় পুলিশের দিক থেকে একটা বড় রকমের গাফিলতি রয়েছে। সেই গাফিলতি কেন এবং কাকে বাঁচাতে, জেলার মানুষের কাছে তা জলের মতো পরিষ্কার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Anubrata Mandal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE