Advertisement
E-Paper

তিন মাস পার, বই আসেনি মডেল স্কুলে

শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে জানুয়ারিতে। তার পরে তিন মাস কেটেছে। অথচ বাংলা, ইংরেজি ও অঙ্কের মতো পাঠ্যবই হাতে পায়নি নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা। কোনও বেসরকারি স্কুলের সমস্যা এটা নয়। এ ছবি দুবরাজপুর সরকারি মডেল স্কুলের।

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০২:২০

শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়েছে জানুয়ারিতে। তার পরে তিন মাস কেটেছে। অথচ বাংলা, ইংরেজি ও অঙ্কের মতো পাঠ্যবই হাতে পায়নি নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা। কোনও বেসরকারি স্কুলের সমস্যা এটা নয়। এ ছবি দুবরাজপুর সরকারি মডেল স্কুলের।

প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, সরকারি মডেল স্কুলগুলিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রম ইংরেজিতে পড়ানো হয়। বীরভূম জেলায় যে পাঁচটি মডেল স্কুল গড়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম পানাগড়-দুবরাজপুর ১৪ নম্বর রাজ্য সড়ক ঘেঁষে থাকা হেতমপুরে অবস্থিত দুবরাজপুর মডেল স্কুল। ২০১৪ সালে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে স্কুলের সূচনা। এখন স্কুলটি পঞ্চম থেকে দশম। এ বারই প্রথম মাধ্যমিক দিল ওই স্কুলের পড়ুয়ারা। কিন্তু, ক্লাস শুরুর তিন মাস পরেও পাঠ্যবই না মেলায় চূড়ান্ত সমস্যায় নবম ও দশম শ্রেণির জনা ত্রিশ পড়ুয়া। উদ্বেগে অভিভাবক থেকে শিক্ষকেরাও।

কেন এমন হবে, তা জানতে সম্প্রতি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বেশ কিছু অভিভাবক। অভিভাবক শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, রণজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, নারায়ণ মণ্ডল, প্রভাত মণ্ডলেরা বলছেন, ‘‘সমস্ত বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়ারা অনেক আগে পাঠ্যবই পেয়েছে। মাধ্যম আলাদা হলেও স্কুলটা তো মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অধীনে। তা হলে কেন আমাদের সন্তানদের সমস্যায় পড়তে হবে।’’

অভিভাবকদের উদ্বেগ থাকাই স্বাভাবিক, তা মানছেন স্কুলের টিআইসি শ্রীকুমারবাবু। তিনি বলছেন, ‘‘বাংলা মাধ্যমের স্কুল পাঠ্যবই পেলেও আমাদের ইংরেজি মাধ্যমের বই এখনও পাইনি। তবে স্কুলের তরফে প্রচুর চেষ্টা করে একটা উপায় খোঁজা হয়েছে। দ্রুত সমাধান মিলবে।’’ বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার খরচ সাধারণের নাগালের বাইরে। সেই সমস্যা কাটাতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রম মেনে মডেল স্কুলগুলি বিভিন্ন জেলায় তৈরি হলেও নানা সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম, অধিকাংশ স্কুল চলছে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষকদের ভরসায়। অভিভাবকদের একাংশ বলছেন, ‘‘দুবরাজপুর স্কুলে পরিকাঠামো গত সমস্যা না থাকলেও শিক্ষকের অভাব রয়েছে। গত বছরের শেষে চার জন নতুন শিক্ষক (পিএসসি-এর মাধ্যমে) যোগ দিলেও মোট শিক্ষক সংখ্যা সাকুল্যে ছয় জন। ছ’টি ক্লাসের জন্য সমসংখ্যক শিক্ষক মোটেই যথেষ্ট নয়। সেই কারণেই প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী এই স্কুলে ভর্তি হয়নি। তার উপরে যোগ হয়েছে সময়ে বই না পাওয়ার সমস্যা।’’

তা হলে? ভারপ্রাপ্ত প্রাধান শিক্ষক বলছেন, ‘‘অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সর্বশিক্ষা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) এর মাধ্যমে বই মেলে। এ বার সেটা পেয়েছি। নবম ও দশম শ্রেণির বই আসে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক), বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) হাত ঘুরে। জানুয়ারি থেকে বহু বার বিভিন্ন স্তরে ঘুরেও বই মেলেনি।
বলা হয়েছিল বই ছাপা হচ্ছে। শেষ ডিআইয়ের কথা মতো বিকাশভবনে গিয়েছিলাম মার্চের ১৯ তারিখ। বেলঘরিয়া সরস্বতী প্রেস থেকে বই নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে। পড়ুয়াদের স্বার্থে সেটাই করতে হবে আমাদের।’’

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রেজাউল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে হেতমপুরের সরকারি মডেল স্কুলের অ্যাডহক পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান তথা মহকুমাশাসক (সিউড়ি সদর মহকুমা) কৌশিক সিংহ অবশ্য ঘটনার সত্যতা মেনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি। সত্যিই সমস্যার। তবে দিন কয়েকের মধ্যেই যাতে পড়ুয়াদের হাতে বই পৌঁছয় দেখছি।’’ দ্রুত বই পৌঁছক, চাইছে দশম শ্রেণির রহিত, সুচরিতা, শিপ্রা, মহিতোষরাও।

Education Books Model School মডেল স্কুল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy