অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটাতে মঙ্গলবার বার্তা দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল বীরভূমের কোর কমিটির সদস্য তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখকে। তাতেও লাভ হল না। পরের দিনই, অর্থাৎ বুধবার রাতে ফের উত্তেজনা ছড়াল সিউড়ি-২ ব্লকের কোমা পঞ্চায়েতের জানুরি গ্রামে। অভিযোগ, বেধড়ক মারধর ও ভাঙচুরের। ‘উঁচুতলা’র কেষ্ট-কাজল বিবাদের ছায়া ‘নিচুতলা’তে এখনও!
স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি বলরাম বাগদি শিবিরের অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলামের অনুগামীরা হামলা চালিয়েছেন বলরামের অনুগামীদের উপর। আক্রান্তদের দাবি, শুধুমাত্র বলরামের ঘনিষ্ঠ বলেই এই আক্রমণ। দলীয় সূত্রে খবর, বলরাম পরিচিত অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে। কাজলের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত নুরুল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে কয়েক জন কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয়। পাশাপাশি চালানো হয় ভাঙচুর। দু’জন গুরুতর আহতকে ভর্তি করানো হয়েছে সিউড়ি সদর হাসপাতালে।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার বীরভূম জেলা পরিষদে গিয়ে কোমা অঞ্চল সভাপতি বলরাম বৈঠক করেছিলেন কাজলের সঙ্গে। উপস্থিত ছিলেন নুরুলও। ওই বৈঠকে ব্লক জুড়ে চলা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে সংগঠনের ঐক্য বজায় রাখার বার্তাও দেওয়া হয়েছিল দুই নেতাকে। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের সংঘর্ষের ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ নভেম্বর সিউড়ির কোমা পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে এসআইআর সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কোমা অঞ্চল সভাপতি। অভিযোগ, ব্লক সভাপতি নুরুলের সঙ্গীরা বলরাম এবং তাঁর ভাইকে বেধড়ক মারধর করেন। এর পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান শতাব্দী। বিষয়টি কানে যেতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নিতে। মঙ্গলবার জেলা পরিষদে বলরাম-নুরুল পক্ষের দাবি ছিল, কোনও গন্ডগোল ছিল না। কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তা মিটে গিয়েছে। তবে বুধবারের ঘটনায় প্রমাণ হল, এখনও মেটেনি দ্বন্দ্ব।